বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত কাল

এম এম ছাদ্দাম হোসেন, ঢাকা প্রতিনিধিঃ

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল মঙ্গলবার ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি উপস্থিত থাকবেন।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রে পরীক্ষা না নিয়ে অনলাইন বা অফলাইনে ‘রিমোট এক্সাম সিস্টেমস’-এর মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। ১৭ অক্টোবর উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার করোনার কারণে সশরীরে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যাবে কি না, সেই প্রশ্নটি সামনে এসেছে। এ ছাড়া এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সরাসরি না নিয়ে জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ অবস্থায় এইচএসসির ফলের পয়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে যুক্ত হবে কি না, সেটি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে, তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

ওই বৈঠকে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বিকল্প ব্যবস্থায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর। সেখানে রিমোট এক্সাম পদ্ধতিতে কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে এবং পরীক্ষার্থীরা কীভাবে অংশ নেবে তা তুলে ধরেন।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, এই পদ্ধতিতে অফলাইন কিংবা অনলাইন দুই পদ্ধতিতেই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যাবে। শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষা পদ্ধতি বলে তিনি উল্লেখ করেন। এরপর এ সফটওয়্যারে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের পক্ষ থেকে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ডাকতে ইউজিসিকে অনুরোধ করা হয়।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর জানান, অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সফটওয়্যারের একটি প্রেজেন্টেশন হবে। সফটওয়্যারে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া কতটা সম্ভব হবে সে বিষয়টি নিরীক্ষার জন্য কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বা সফটওয়্যার প্রকৌশলী যুক্ত হবেন। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিষদ সভাপতি ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেছিলেন, ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা করা হবে।

গত বছরের মতো করেই বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গুচ্ছ পদ্ধতিতেও ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, অনলাইন বা অফলাইনে রিমোট এক্সাম পদ্ধতিতে নেওয়া যায় কি না এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এখনও সময় আছে। তাই এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও ৩৯টিতে সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মধ্যে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে একটি, সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে আরেকটি এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে আরেকটি গুচ্ছ করে এই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের জানান, উচ্চশিক্ষার ভর্তি কীভাবে হবে এখনই বলা সমীচীন হবে না। আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি কীভাবে হবে। তবে করোনা পরিস্থিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তির আশা প্রকাশ করেন তিনি।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *