টুঙ্গিপাড়ায় অতিবৃষ্টিতে সাড়ে ৭’শ হেক্টর জমির ধান নষ্ট

সজল সরকারঃ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অতিরিক্ত বৃষ্টি ও নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাষকৃত রুপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুধুমাত্র বন্যা সহনশীল ধানের জাত বাদে অন্যগুলোয় পচন ধরেছে। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এতে চাষাবাদকৃত রুপা আমন জাতের সাড়ে ৭’শ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। এতে উপজেলার ২৫’শ কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস স‚ত্রে জানা যায়, টুঙ্গিপাড়ায় মোট সাড়ে ১৫’শ হেক্টর জমিতে রুপা আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছিলো। অতিবৃষ্টি ও নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে চাষকৃত রুপা আমন ধানের সাড়ে ৭’শ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। এতে প্রায় ১৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ১২০ হেক্টর জমির বিজ তলা নষ্ট হয়েছে।

কুশলী গ্রামের মহিব শেখ বলেন, এক একর জায়গায় রুপা আমন ধানের বীজতলা করেছিলাম। তাতে প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে ঐ ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হতো। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।

বর্নি গ্রামের কৃষক কাউসার শেখ বলেন, প্রায় তিন বিঘা জমিতে রোপা আমন রোপণ করেছিলাম। ধান ইতিমধ্যে কুশি স্তরে ছিলো। কিন্তু নদীর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় দেড় লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া কাকইবুনিয়া গ্রামের উৎসব বিশ্বাস, বিধান বিশ্বাস, বিমল শিকদার, তপন রায়, পরিতোষ ঘরামি এ প্রতিবেদককে জানান, তাদের জমির নদীর পাড়ে হওয়ায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে তাদের পুরো ক্ষেত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এতে তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই প্রণোদনার মাধ্যমে সরকার যদি সাহায্যের হাত বাড়ায় তাহলে উপজেলার কৃষকেরা একটু ঘুরে দাড়াতে পারবে।

কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল উদ্দিন বলেন, যেহেতু বন্যার পানি ১৫-২০ দিনের মধ্যে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই সময়ে কৃষকদের নাবি জাতের (বিনা ধান ৭) ধানের চারা উৎপাদন করে ২০-২৫ দিনের ভিতরে বন্যায় নিমজ্জিত পানিতে রোপন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বেশকিছু কৃষককে বিনাম‚ল্যে ধানের চারা বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকেরা যদি নিজেরা কিছু নাবি জাতের ধানের চারা উৎপাদন করে রোপন করে তাহলে তারা হয়তো ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবে। এছাড়া কৃষি মন্ত্রনালয়ে প্রণোদনার জন্য আবেদন ও উপজেলার কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানানো হয়েছে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *