নাজিরপুরে ঘরে ঘরে জ্বর! যাচ্ছেনা করোনা টেষ্টে

নাজিরপুরে
পিরোজপুরের নাজিরপুরে প্রায়ই প্রতি ঘরে ঘরে বাড়ছে জ্বরের প্রাদূর্ভাব। এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে পরিবারের সবাই।
শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না এই জ্বর থেকে। আশংখাজনক হারে জ্বরের রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জনসাধরনের মাঝে করোনার ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে। সর্দি, জ্বর, কাশি, ও গলা ব্যথার হলেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাচ্ছে না করোনা টেষ্ট করাতে। আবার দেখা যাচ্ছে যিনিই জ্বর নিয়ে পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন তিনিই করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন।
করোনা আক্রান্তের ভয়ে অনেকেই ডাক্তারের কাছে না গিয়ে বাড়িতেই গোপনে নিজের মত করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নাজিরপুরের অনেক ঔষুধের দোকানদারা জানান বর্তমানে সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও গলা ব্যথার ঔষুধ বিক্রী হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক গুন বেশি। নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের অফিস সূত্রে জানা যায় সর্ব শেষ এক সপ্তাহে এ পর্যন্ত ৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৩ জন রোগী করোনা পজেটিভ। 
উপজেলায় এখন পর্যন্ত মোট করোনা পজেটিভ হয়েছে ১৪৮ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪ জন। আইসোলেসনে ছিল ১ জন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। জ্বর সহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন বর্হিঃবিভাগে ১৯০ থেকে ২০০ জনের মত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত ১ সপ্তাহে উপজেলায় করোনা সনাক্তের হার বেড়ে দাড়িয়েছে ৬০ শতাংশ। পুরো উপজেলার হঠাৎ করে সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় মাঠে সক্রিয় রয়েছেন পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের লোকজন। পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ার মত। নাজিরপুর সদর উপজেলা সহ প্রায় প্রতিটি হাট-বাজারে বন্ধ করা সহ রয়েছে তাদের কার্যক্রম। করোনার ননুমা দিতে মানুষের অনীহা থাকায় উপজেলায় করোনা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্নয় করতে পারছেনা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
দৈনিক আজকের দর্পন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী (শাহীন) জানান নাজিরপুরে হঠাৎ করে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত দুইটি করোনা প্রতিরোধক বুথ স্থাপন করি যাতে করে মানুষ সচেতন হয়।  
নাজিরপুর সদর ইউনিয়নের কবির হোসেন (৪০) ও শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের জাহীদুল হক (৩৮) জানান  আমরা ৪/৫ দিন জ্বর ও সর্দিতে ভুগছি। জ্বরে কাহিল হয়ে পড়ছি বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নিচ্ছি আমরা। নাজিরপুরে প্রশাসন, পুলিশ, সরকারী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সাংবাদিক সহ কেউই  রেহাই পাচ্ছে না এ জ্বর থেকে। কয়েক দিন জ্বরে ভুগে করোনা টেষ্টে ধরা পড়ছে তাদের করোনা পজেটিভ। 
এ বিষয়ে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ ফজলে বারী জানান আমরা শুনেছি প্রায়ই সবার ঘরে ঘরেই জ্বর। উপজেলায় হঠাৎ করে করোনা প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে এলাকার জনসাধারণদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনীহা ও মুখে মাস্ক ব্যবহার না করে অবাদে চলাফেরা করা। হাসপাতালে করোনা টেষ্টের যথাযথ ব্যবস্থা রয়েছে। সবার উচিৎ করোনা টেষ্ট করা। 
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ওবায়ুর রহমান জানান নাজিরপুরে লকডাউন চলমান। করোনা নিয়ন্ত্রনে উপজেলা প্রশাসন কঠোর তম থেকে কঠোর অবস্থানে মাঠে রয়েছে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন থেকে আমরা মাইকিং করে বার বার সতর্ক করছি। সতর্কতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছি। এমনকি যারা এগুলো উপেক্ষা করছে তাদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জড়িমানা করা হচ্ছে। জনসাধরণের উচিৎ লকডাউন মেনে চলা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করা, নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করা। 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *