৪ জেলায় ব্রি হাইব্রিড ধানের রেকর্ড ফলন

কোটালীপাড়া প্রতিনিধি:
৪ জেলায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড ধান রেকর্ড পরিমান ফলন দিয়েছে। ব্রি হাইব্রিড ধান৫ প্রতি হেক্টরে ১০.৮৬মেট্রিক টন(১৪%আদ্রতায়) ও ব্রি হাইব্রিড ধান৩ হেক্টর প্রতি ৯.৬৭ মেট্রিক টন(১৪%আদ্রতায়)ফলেছে। এ ধান দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হরিণাহাটি গ্রামের কৃষক ঠান্ডা শেখের জমিতে উৎপাদিত ওই দু’ জাতের ধান মঙ্গলবার কেটে পরিমাপ করে গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। দেশে প্রচলিত হাইব্রিড ধান হেক্টর প্রতি ৭ থেকে ৮ টন ফলন দেয় বলে জানায় গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি ।
ওই অফিস আরো জানিয়েছে, চলতি বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জ, নড়াইল,বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলার আনুমানিক ৪০ একর জমিতে কৃষক ১শ’টি প্রদর্শনী প্লটে ওই দু’ জাতের হাইব্রিড ধানের আবাদ করে প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি ফলন পেয়েছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার হরিণাহাটি গ্রামের কৃষক ঠান্ডা শেখ বলেন, ব্রি থেকে বীজ,সার, পরামর্শ ও নগদ অর্থ পেয়ে আমার ১ একর ১৫ শতাংশ জমিতে ব্রি হাইব্রিড ধান৩ ও ব্রি হাইব্রিড ধান৫ জাতের আবাদ করি। এ ধানে সার কম লেগেছে এবং রোগ ও পোকার আক্রমন হয়নি। তাই কম খরচে বেশি বেশি ধান উৎপাদন করে আমি লাভবান হয়েছি। আমার ক্ষেতে ধানের সবোর্চ্চ ফলন দেখে প্রতিবেশিরা আগামীতে এ ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ মিলন বলেন, ধান গবেষণার এ দু’ জাতের হাইব্রিড ধান মাঠ ট্রায়েলে সবোর্চ্চ ফলন দিয়েছে। এ জাত ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে ধান উৎপাদনে বিপ্লব ঘটবে।

গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ সাইদী রহমান বলেন, এ জাতের ধান চিকন। বাজারে একটু বেশি দামে বিক্রি হবে। ধানের ভাল ফলন দেখে ৪ জেলার কৃষক আগামী বছর এ ধান আবাদে আগ্রহী হয়েছেন। বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএডিসি এ ধানের বীজ উৎপাদন শুরু করলে কৃষকের বীজের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
ব্রি, আঞ্চলিক কার্যালয়, গোপালগঞ্জ এর প্রধান ড. মোঃ খায়রুল আলম ভূঁইয়া বলেন, প্রচলিত হাইব্রিড ধান হেক্টরে ৭ থেকে ৮ টন ফলন দেয়। সেখানে আমাদের উদ্ভাবিত হাইব্রিড রেকর্ড ফলন দিয়েছে। এছাড়া বিদেশী হাইব্রীড ধান বীজ বাজারে ২ শ’ থেকে ২ শ’ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।এ ব্যাপারে ব্রি হাইব্রিড ধানের বাণিজ্যিকভাবে বীজ উৎপাদনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। সেখানে ব্রি হাইব্রীড ধান বীজ প্রতি কেজি কৃষক ৩০ থেকে ৫০ টাকায় কিনতে পারবেন। এতে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা ও এসডিজি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *