স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম বুলেট ছোঁড়ে পুলিশ: ডিআইজি হাবিব

স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে জানিয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণে বলেছিলেন যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। সেটিতে প্রথম সারা দিয়েছিলো পুলিশ। স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম বুলেট ছুঁড়েছিলো পুলিশ; জীবনও দিয়েছিলো পুলিশ।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে বাংলা একাডেমিতে ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ শীর্ষক গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ উপলক্ষে পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বইটির সম্পাদনাও করেছেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, প্রখ্যাত চিত্রকর মুস্তাফা মনোয়ার, মুখ্য আলোচক ছিলেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী, র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, এন্টিটেরোরিজম ইউনিটের প্রধান এস এম রুহুল আমিন, সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান প্রমুখ।

ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পুলিশে যোগ দেওয়ার পর আমার ইচ্ছে হয়েছিলো পুলিশের ইতিহাস জানতে। তখন দেখেছি, পুলিশের একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তান আমলেও বাঙালি পুলিশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সহযোগিতা করেছেন। আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, পুলিশের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আস্থা বিশ্বাস বেশি ছিলো। তিনি (বঙ্গবন্ধু) যখন বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যেতেন সেখানে বর্তমান এসবি পুলিশ (তৎকালীন ডিআইবি পুলিশ) তাকে সহযোগিতা করতো। পেশাগত কাজের ফাঁক- ফোকর দিয়েও সহযোগিতা করেছে। ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে, সেটিতে পুলিশ প্রথম সারা দিয়েছে। পুলিশই স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম বুলেট ছুঁড়েছিলো, জীবন দিয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলেও দেখা যাবে, অনেকগুলো দিকে পুলিশ এগিয়ে আছে। পুলিশের ওয়্যারলেস মেসেজের মাধ্যমেই জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের বুলেট দিয়ে জবাব দিয়েছে পুলিশ। যা সারাদেশে খবরটি পৌঁছে যায়।’

‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ বইয়ের বরাত দিয়ে ডিআইজি হাবিব বলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি দলিলে এক ভারতীয়ের জবানিতে পাওয়া গেছে, ২৫ মার্চ রাত্রে পাক সেনারা একমাত্র রাজারবাগ পুলিশ লাইন ছাড়া আর কোনো জায়গা থেকে প্রতিরোধ পায়নি। তাছাড়া তৎকালীন আরেকজন সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল আবু তাহের সালাউদ্দিন তার বইয়ে লিখেছেন, ”যুদ্ধে যখন পাকিস্তান বাহিনী কোনো রকম জয়লাভ করতে পারছিলো না, তখন ভোর ৬ টার সময় ট্যাঙ্ক নিয়ে আক্রমণ চালায়।” কারণ পুলিশ থ্রিনট থ্রি রাইফেল দিয়ে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছিল।’

যতদিন বাংলার মানুষ থাকবে ততদিন এই রাজারবাগের ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে উল্লেখ করে ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের যুদ্ধে পুলিশের অবদান নিয়ে তেমন কোনো লেখা দেখা যায় না। এ কারণে রাজারবাগের ইতিহাস নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। অনুজ যেসব অফিসার আসবেন, তারা যেন সঠিক ইতিহাস আরও তুলে আনেন।’



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *