সত্য ঘটনা অবলম্বনে

একটি সুন্দর জীবনের দুঃসহ বেদনার জীবনে বেঁচে থাকার সংগ্রাম জীবনী: পর্ব ১ লেখিকা÷মাধুরী বোস ভারতের দক্ষিন চব্বিশপরগনা জেলার বাসন্তী গ্রামের একটা বুন্দিমতি,ভদ্র ,সুশ্রী ,এবং কঠোর পরিশ্রমী মেয়ে আছে ৷হাঁসি খুশি সকলের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক৷তার অনেক প্রতিভা৷সে ল্যাবের, কাজ৷পার্টির, কাজ হাতের ,কাজ এক কথায় যে কোন কাজ একবার দেখলে সে করে দিতে পারত ৷এবং ভালো চাকুরী করতো সে?খুব সুখেই তার দিন কাটছিলো৷কিন্তু সুখ যে তার কপালে সইতে চাইলো না৷এক দিন এলো সেই কালো রাত৷একটা প্রতীবেশী ভাইকে নিয়ে যাচ্ছিলেন বান্ধবীর বাড়িতে৷গাড়ি চলছে আপন গতিতে৷মূহুত্বের মধ্যে মেনে এলো ঘন অন্ধকার সেই কাল সময়টা৷যার জন্য দুজনের কেউই প্রস্তুত ছিলোনা৷একটা রড বোঝাই লরি বেপরোয়া গতিতে এসে তাদের গাড়ীটিকে মাঝ রাস্তাতে দুমরে মুচকে দিয়েছে৷মেয়েটি জ্ঞান আছে সে তাকিয়ে দেখতে পায় গাড়ীটি তার একটি পায়ের উপর দিয়ে চাকা উঠিয়েছে আর মেয়েটির অর্ধ্যেক শরীর লরির ভিতরে৷সেই অবস্থাতে তার ভাইটির খোজ শুরু করে মেয়েটি৷মেয়েটি জানেনা যে তার ভাইটি আর কখনো কোনদিন তার ডাক শুনবে না৷সে চলে গেছে পরপারে৷না ফেরার দেশে৷সে তার ভাইকে ডাকে বলে দাদা কিছু হবে না তোমার৷অথচ মেয়েটি নিজেও যে তার ভাই যে পথে চলে গেছে সেই পথের পথিক হতে চলেছে তা সে বুঝতে পারছে না৷পথ চারিরা মেয়েটিকে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে৷কিন্তু এটা যে পুলিশ কেচ তাই ডাক্তারের তাকে চিকিৎসা দিতে নারাজ৷শুরু হোল৷নিয়তির উপরে নির্ভর করা৷এক ক্লিনিক থেকে আর এক ক্লিনিক চলছে জার্নি৷কেউ তার চিকিৎসা করছেনা৷সবাই বলছে পুলিশ কেচ্৷অবশেষে ৮ টা ক্লিনিক ঘুরে ঠাই হোল সরকারী হাসপাতালে৷চলছে চিকিৎসা এখানই শেষ নয়?গনমাধ্যমে খবর প্রকাশ হোল৷দুজন মটরসাইকে আরহীর লরি দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু৷অন্যজনের অবস্থা গুরুতর আশংক্ষা জনক৷মেয়েটির জীবনের সাথে যমরাজ ও ডাক্তারের লড়াই শুরু হোল৷সেই সাথে পরিবারের লোকজনের উপরে নেমে এলো অমঙ্গলের ছায়া৷মেয়েটির সুচিকিৎসার জন্য দরকার লক্ষ লক্ষ টাকা৷একটার পর একটা অপারেশন চলছে৷পরিবারের সামর্থ যা ছিলো তার মধ্যে ৪ লক্ষ টাকা চিকিৎসার জন্য খরচ করে ফেলেছে৷তার পরিবারের পক্ষে আর চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেলো চিকিৎসা৷প্রতিটি অপারেশন জীবন মৃত্যুর লড়াই৷তার উপরে দেখা দিলো অর্থ সংকট৷পুরোপুরি ভালো হতে না হতে মেয়েটির চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেলো৷সারাটা জীবনের জন্য মেয়েটি পেল দুঃসহ যন্রনাময় আর প্রতিবন্ধি জীবন৷সেই সাথে সমাজের ও পরিবারের বোঝা হয়ে গেল একটি শিক্ষিতা কর্মঠ সুন্দরী মেয়ের জীবন৷এখানেই শেষ নয়?শুরু হোল আর একটি অধ্যায়৷সমাজ ও পরিবারের দয়া করুনা আর মানসিক ভাবে পীড়াদায়ক জীবন সংগ্রাম৷কখনো বিছানায় শুয়ে থেকে শুনতে হয় অনেক বেদনাদায় কথা সেটাও আবার আপনজনের মুখে৷কেন সে বেঁচে ফিরেছে দুর্ঘটনায় মারা গেলেই ভালো হোত৷একটু চিন্তা করুন?কতটা রিদয় বিদারক কথা যখন সেই মেয়েটি শুনতে পায় তার আপন কেউ তাকে মরে যেতে বলছে৷পাড়ার প্রতিবেশীরা তাকে খোড়া বা প্রতিবন্ধি বলে ডাকছে৷যে খেলার মাঠে সে খেলা করতো আজ সেই মাঠের পাশে পরে থাকা একজন দর্শক মাত্র৷মেয়েটি তার জীবনে যাকে সবচেয়ে আপনজন ভেবে ছিলো তার কাছ থেকেও শুরু হোল অবহেলা আর গঞ্জনা৷মানুষ স্বার্থপর তার প্রকৃত রুপ তখন প্রকাশ পায় যখন আমরা বিপদে পরি৷ঠিক এমনটাই ঘটলো মেয়েটার সাথে যাকে সে পরম বন্ধু ভেবেছিলো সে দেখাতে শুরু করলো তার আসল রুপ৷সেই পরম বন্ধু অত্যাচার যেন অসয্য বেদনা দায়ক৷শারীরক ও মানুসিকভাবে মেয়েটি একবার ভেংগে পরতে লাগলো৷মেয়েটি নিজেই এখন চায় সৃষ্টিকর্তার কাছে তার মৃত্যু৷মেয়েটির চিকিৎসা বন্ধ টাকার অভাবে৷সে বার বার ছুটতে থাকলো থানা পুলিশ ও কোর্টের তারিখের পিছনে৷যদি তার সুচিকিৎসা জন্য কিছু অর্থ সে পেতে পারে?৷আজ দুবছর শেষ হয়ে গেলো এখনো কোন সাহায্য তার ভাংগে জুটেনি৷তবু ছুটে চোলেছে বিচারের আশায় কোর্টের ও থানার দারে দারে৷কি মনে হয় পাবে কি সে ন্যায বিচার?নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনের জন্যও হাত পাততে হয় কারো না কারো কাছে৷যে হাত দিয়ে একদিন সে নিজে আপনজনের ও বন্ধুদের প্রয়োজন মিটিয়েছে আজ সে হাত মানুষের কাছে হাত পেতে সাহায্য নিতে হোচ্ছে৷হতাশা যেন ভয়ংকর রুপ নিয়ে দিন দিন বেরেই চলেছে?এমন সময় তার পরিচয় হয় ভিনদেশী একটা মেয়ের সাথে৷পরিচয় থেকে হয় বন্ধুত্ব৷সেই বন্ধু তাকে দিতে থাকে নতুন করে বাঁচবার উৎসাহ৷দেখাতে থাকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন৷এই নতুন বন্ধুটা তার জীবনে আশার আলো নিয়ে এলো৷শুরু হোল আর একবার জীবন যুদ্ধো৷সে ভাবলো এবার ঘুরে দাড়াতেই হবে যেভাবেই হোক৷শুরু হোল কাজের সন্ধান৷শরীরের তীব্র যন্রনা নিয়ে কাজের সন্ধানে ঘর ছাড়লো আজকে প্রতিবন্ধি মেয়েটি৷একটার পর একটা কাজ খুজে চলছে৷অবশেষে একটা কাজের সন্ধান পেল মেয়েটি৷একটা বিস্কুট কমম্পানিতে৷রিসিভশনের কাজ বেতন ৬০০০ হাজার টাকা৷কিন্তু কমম্পানিকে চাকুরী পেতে হলে দিতে হবে ৪০০০হাজার টাকা৷কোথায় পাবে ৷সে এতগুলো টাকা৷বাড়ীতে ফোন দিয়ে টাকা চাইলো মেয়েটি কিন্তু বাড়ীতে তাকে দেওয়ার মত টাকা নেই৷তার বাবা ও যে গাড়ী দুর্ঘটনায় একটা হাতের হাড় ভেংগে বিছানায় বেকার পরে আছে?কি হবে এবার?তাহলে কি চাকুরীটা হবে না?এবার মেয়েটা তার বড় ভাইয়ের কাছে ফোন করলো৷তার ভাই ও বিয়ে করেছে ভাবী(বৌদি)নিয়ে আলাদা থাকে৷তবু ভাইকে খুব কষ্টের সাথে বল্ল ভাই শেষবার আমাকে একটু সাহায্য করনা আর কখনো তোমার কাছে সাহায্য চাইবো না৷ভাই বল্ল ঠিক আছে দিচ্ছি তবে একবারই শেষ৷মেয়েটি এবার ভাইয়ের দেওয়া টাকাটা কমম্পানিকে দিয়ে দিলো৷ দেখা যাক এবার সৃষ্টিকর্তা মেয়েটার ভাংগে কি রেখেছে?চাকুরীর জয়েন্ট ৭-৯-২০২০ইং তাং সে খুব চিন্তায় আছে৷বাড়ী থেকে বেড়িয়ে এসেছে৷এবং ভুলে গেলে চলবে না সে কিন্তু আর সবার মত সাধারণভাবে চলাফেরা করতে পারেনা৷চলতে ফিরতে গাড়ীতে উঠতে নামতে এমনকি সে ব্যক্তিগত কাজ ও স্বাভাবিকভাবে করতে পারেনা৷তার উপরে রয়েছে তার পায়ের ক্ষত জায়গাতে অসম্ভব অসয্য যন্রনা৷তবু সব কষ্ট তার হাঁসি মুখেই শেষ হবে চাকুরীটায় জয়েন্ট যেদিন করতে পারবে???



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *