মূর্খ-অশিক্ষিতরাও সাংবাদিকতা পেশায় কেন!

 আমাদের সমাজে কিছু সিনিয়র সাংবাদিক মূর্খ আর অশিক্ষিত মানুষদের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে কুলি, দিনমজুর, গরুর দালাল, থানার দালাল, জমির দালালসহ মূর্খ আর অশিক্ষিত মানুষদের সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পেছনে একটুও কি দায়ভার সিনিয়র ও শিক্ষিত সাংবাদিকদের ওপর বর্তায় না? আমার মনে হয় মূর্খ আর অশিক্ষিত মানুষদের ‘সাংবাদিক’ পরিচয় দেয়াটা একটি লক্ষণ মাত্র, এটি হচ্ছে- দক্ষ ও শিক্ষিত সাংবাদিকদের অদক্ষতার ফসল।
এর আরও বহু কারণ রয়েছে। একজন সাংবাদিক আরেকজনকে ঘায়েল করতে মূর্খদেরকে মোটা কিংবা হালকা অর্থের বিনিময়ে নামসর্বস্ব কিছু পত্রিকার কার্ড করিয়ে দিয়ে নিজের দলে টেনে দল ভারী করে। মূর্খদের দলে টেনে শিষ্য বানিয়ে নিজেকে গুরু হিসেবে জাহির করে। দল-বল নিয়ে ভেড়ার পাল সাজিয়ে ধান্দাবাজিতে যাওয়াসহ সিনিয়রদের নানা অদক্ষতার কারণে মূর্খরা এ পেশায় দিন দিন সংখ্যাগুরু হচ্ছে।
কথাগুলোর প্রমাণ চাইলে খোঁজ নিয়ে দেখবেন সব মূর্খদের এ পেশায় আসার পেছনে কোন না কোন সিনিয়র, দক্ষ ও শিক্ষিত সাংবাদিকেরই অবদান বেশি। মূর্খদের সাংবাদিকতায় আসার পেছনে শুধু সিনিয়র সাংবাদিকদেরই আমি দায়ি করবো না, এখানে মিডিয়ার মালিক কর্তৃপক্ষও কম দায়ি নয়।
ইদানিং অনেক পত্রিকা/টিভি অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা অভিজ্ঞতা না থাকলেও, শুধু অর্থের বিনিময়ে যদু, মদু ও কদুর মাঝে কার্ড বিতরণ করছে। একই পত্রিকায় একই উপজেলায় বা জেলায় একাধিক প্রতিনিধি নিয়োগের ইতিহাসও আছে।
নিয়োগ দিয়ে শুধু একটাই উপদেশ তারা দেন তা হলো- ‘নাও আর যাও। বাবা, কামাই করে খাও’। এসব নিয়োগ বাণিজ্য হয়তো মফস্বলের সিনিয়র সাংবাদিকদের থামানোর ক্ষমতা নাও থাকতে পারে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে তাদের করণীয় কি? সিনিয়র সাংবাদিকদেরই এ সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন, রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিকদের সকল সংগঠনকে এক হয়ে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। না হলে হয়তো মফস্বল সাংবাদিকতাও কুলি, দিনমজুর, গরুর দালাল, থানার দালাল, জমির দালালসহ মূর্খ আর অশিক্ষিত মানুষদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *