পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে স্কুল মাঠে অনুষ্ঠানের আয়োজন, পরিক্ষায় ব্যাঘাত ঘটার শঙ্কা

গোপালগঞ্জ শহরের পৌর এলাকায় ১৫ নং শিশু কল্যান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে মাঠ দখল করে অনুষ্ঠানের আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে ।

ব্যক্তি মালিকানা একটি ওষুধ প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সকল ডাক্তারদের কে নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন মেডিকেল কলেজ কতৃপক্ষ । পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে অনুষ্ঠানের হৈচৈ সোরগোলে পরিক্ষার পরিবেশ নষ্ট ও শিক্ষার্থীদের পরিক্ষায় ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা করছেন অভিভাবকেরা। এদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলছেন তারা অনুষ্ঠানের বিষয়ে কিছুই জানেন না। জানা গেছে, আগামী ১২ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে বেক্সিমকোর পৃষ্ঠপোষকতায় শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সকল ডাক্তারদের নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন মেডিকেল কলেজ কতৃপক্ষ। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মেডিকেল কলেজের সকল ডাক্তারগন সহ বেক্সিমকো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ অনুষ্ঠানে প্রায় চারশো থেকে পাচশো মানুষের সমাগম হওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পুর্ন অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে ১৫ নং শিশু কল্যান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। দুপুরে মধ্যাহ্নভোজেরও আয়োজন করেছেন তারা। এদিকে গত ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা চলছে। সোমবার তাদের বাংলা পরিক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলে আগত অতিথিদের হৈ চৈ ও সোরগোলে পরিক্ষার পরিবেশ নষ্ট ও পরিক্ষায় ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা করছেন অভিভাবকেরা। সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠ জুড়ে বিশালআকৃতির প্যান্ডেল করা হয়েছে। আনা হয়েছে অর্ধশত ডেকোরেটর টেবিল ও শত শত চেয়ার । অন্যদিকে স্কুলের ক্লাসে চলছে পরিক্ষা। স্কুলে সকল শিক্ষার্থী পরিক্ষা না দিয়ে চেয়ে আছে মাঠের প্যান্ডেলের দিকে। আর বার বার শিক্ষকদের কাছ জানতে চাইছে পান্ডেলে কিসের আয়োজন।

এবিষয়ে তৃতীয় শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর মা সাবিনা বেগম ঢাকা পোস্ট কে বলেন, আগামীকাল ক্লাস আমাদের সন্তানেরা পরিক্ষা দিবেন আর বাইরে অনুষ্ঠানের রান্না হবে। অতিথিরা হৈচৈ করবে। এতে আমাদের সন্তানদের পরিক্ষায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তারা পরিক্ষায় মন না দিয়ে অনুষ্ঠানের দিকে তাকিয়ে থাকবে। এ বিষয়ে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মোঃ জাকির হোসেন ঢাকা পোস্ট কে বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে আসলে খানাপিনা করা যায় না তো তাই আর কি স্কুলের মাঠে একটু খানাপিনার আয়োজন করেছি। যদি তাতে শিক্ষার্থীদের পরিক্ষায় কোন সমস্যা হয় তাহলে আমরা সেখানে করলাম না। অন্যস্থানে করলাম। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তন্দ্রা মন্ডল বলেন, স্কুল তো শুক্রবার -শনিবার বন্ধ থাকে। আজ রোববার সকালে স্কুলে এসে দেখি মাঠ জুড়ে প্যান্ডেল। পরে উর্ধতন কর্মকর্তা কে জানালে তিনি আমাকে বললেন বেক্সিমকোর পৃষ্ঠপোষকতায় মেডিকেল কলেজের ডাক্তারদের নিয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠান করবে মেডিকেল কলেজ কতৃপক্ষ। পরবর্তীতে আমি যখন দেখলাম বিষয়টি আমাদের উর্ধতন কর্মকর্তা জানেন তখন আর আমি এ বিষয়ে কিছুই বললাম না।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ বলেন, মেডিকেল কলেজ কতৃপক্ষ আমাকে বলছে যে তারা শুধুমাত্র ডাক্তারদের নিয়ে একটু বসে কথাবার্তা বলবেন, সেখানে কোন প্যান্ডেল বা রান্নাবান্নার আয়োজন তারা করবে না। আমি তাদের সবকিছু শুনে আমাদের এডিসি (শিক্ষা) স্যারের সাথে তাদের কথা বলতে বলি। এখন আপনার কাছে শুনতেছি যে তারা বড় প্যান্ডেল করছে।আমি এখনি পরিদর্শনে লোক পাঠাচ্ছি। যদি তারা বড় প্যান্ডেল করে তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। এবিষয়ে এডিসি (শিক্ষা) এ কেএম হেদায়েতুল ইসলাম ঢাকা পোস্ট কে বলেন, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমাকে ফোন করে বলেছেন তারা তাদের সকল ডাক্তারদের নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের কোন লিখিত আবেদন আমরা পায়নি। যদি তারা পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে তাহলে আমরা আমাদের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *