কেশবপুরের এক গৃহবধুর মণিরামপুরে রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন

জি এম ফিরোজ উদ্দিন, মণিরামপুর (যশোর) : যশোরের মণিরামপুরে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে এসে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে শতাব্দি বিশ্বাস (২৭) নামে এক গৃহবধুর। মণিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ভবানীপুর গ্রামে মঙ্গলবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। তবে কেশবপুরের ওই গৃহবধুর মণিরামপুরে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে নানাবিধ গুঞ্জন প্রচার হচ্ছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বুধবার সকালে মর্গে পাঠিয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নিহত গৃহবধু কেশবপুর উপজেলার ডহরী গ্রামের শম্ভুনাথ বিশ্বাসের স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী। সম্প্রতি কেশবপুর উপজেলার মনোহরনগর বাগডাঙ্গা গ্রামের কার্তিক চন্দ্র রায়ের ছেলে স্বামীর ভগ্নিপতি মনিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম ভবানীপুর মথুরাপুকুর এলাকায় অবস্থিত পল্লী উন্নয়ন এ আর মডেল স্কুলের পরিচালক অর্জুন রায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে শতাব্দি বিশ্বাস। মঙ্গলবার বিকাল ৩ টার দিকে শতাব্দির ঝুলন্ত লাশ অর্জুন রায়ের পল্লী উন্নয়ন কৃষি সমবায় সমিতি ও পল্লী উন্নয়ন এ আর মডেল স্কুল ঘরের ছাদের চিলেকোটা থেকে উদ্ধার হয়। এ মৃত্যুর ঘটনায় নিয়ে এলাকায় নানাবিধ গুঞ্জন প্রচার হচ্ছে। অর্জুন রায়ের দাবী, তার শালা বৌয়ের সাথে বিপুল বিশ্বাস নামের তার এক চাচাতো শালার সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন আগে শ্বশুর বাড়িতে শতাব্দি বিপুলের সাথে অনৈতিক অবস্থায় ধরাও পড়ে। এরপর স্বামী শম্ভুনাথ তার বাড়িতে শতাব্দিকে রেখে যায়। এঘটনার পরে বিপুলের পিতা উত্তম বিশ্বাস কেশবপুর থানায় একটি জিডি করে। থানা থেকে পুলিশ জিডির তদন্তে আসবে; সেই সংবাদ পেয়ে মান সম্মানের ভয়ে শতাব্দি তার বাড়িতে আত্মহত্যা করতে পারে। এদিকে বিপুল বিশ্বাসের পিতা উত্তম বিশ্বাসসহ অনেকেই দাবি করেছেন নিহত শতাব্দী বিশ্বাসের সাথে অর্জুন রায়ের দীর্ঘদিন যাবৎ পরকীয়া সম্পর্ক চলে আসছে। এ ঘটনার জের ধরে সম্প্রতি অর্জূন বিপুল বিশ্বাসকে হত্যার হুমকি দেয়াসহ মারপিট করায় তিনি কেশবপুর থানায় জিডি করেন। তাছাড়া শতাব্দী প্রায়ই অর্জুন রায়ের বাড়িতে অবস্থান করে। তিনি দাবি করেন অর্জুনের বাড়ি কেশবপুর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামে। আর তার লাশ উদ্ধার হয়েছে অর্জুন রায়ের পল্লী উন্নয়ন এ আর মডেল স্কুলের চিলেকোঠা থেকে। যা অর্জুনের বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে মনিরামপুর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে। এই মৃত্যু অর্জুন শতাব্দীর অনৈতিক সম্পর্কের কারণে হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। এদিকে অপর একটি সুত্রের দাবি অর্জুন রায়ের পরিচালনাধীন স্কুল ও সমিতির ম্যানেজার দীলিপ রায়ের সাথেও শতাব্দীর অনৈতিক সম্পর্ক চলে আসছিল। যেকারণে শতাব্দী প্রায়ই ননদের বাড়ি বেড়াতে আসার নাম করে অর্জুন রায়ের বাড়িতে আসে এবং অর্জুনের বাড়িতে না থেকে তার প্রতিষ্টানের তৃতীয় তলায় (অর্জুনের থাকার জন্য রক্ষিত কক্ষ ) অবস্থান করে। ঘটনার দিন কোন কারণে ম্যানেজার দীলিপ রায়ের সাথে মনোমালিন্যের ফলেও সে আত্মহত্যা করতে পারে। এ ব্যাপারে মণিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, তার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে নানা কথা-বার্তা প্রচার হওয়ার কারনে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় মণিরামপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *