চলতি সপ্তাহেই জেলা প্রশাসনের গণবিজ্ঞপ্ত, মাস্ক না পরলে যশোর জেলায় মিলবে না সেবা

যশোরে মাস্ক ব্যবহারের উপর কড়াকড়ি আরোপ করছে প্রশাসন। মাস্ক পরিহিত ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে মার্কেট, হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ অন্য প্রতিষ্ঠানে সেবা দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে চলতি সপ্তাহেই যশোর জেলা প্রশাসন গণবিজ্ঞপ্তি দেবে। আর এ নির্দেশ না মানলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। শনিবার বিকেলে যশোর সার্কিট হাউজের সভাকক্ষে ‘করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির’ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ও যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। সভায় আলোচনা হয়, বর্তমানে কোভিড-১৯ রোগীদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সদর হাসপাতাল ছাড়াও যশোরের কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিকেও চিকিৎসা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ও নমুনা পরিবহনকারী যানবাহন সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যশোরের বক্ষব্যাধি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবার মান ভালো করার জন্যও তাগিদ দেওয়া হবে। যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু যশোরের বেসরকারি ক্লিনিক সাধারণ দোকানের মতো ব্যবসা করছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মানুষ অসহায় হয়ে শেষ সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তখন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কাছে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ক্লিনিক গলাকাটা ব্যবসা করে যাচ্ছে। প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দ্রুত এ স্বাস্থ্যসেবার নামে এ ‘স্বাস্থ্য ব্যবসা’ বন্ধ করার অনুরোধ করেন।

এছাড়া সভায় জেলার স্বাস্থ্যসেবার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার ঘোষণা দেন মেয়র। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলিপ কুমার রায় বলেন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। করোনা রোগীদের অক্সিজেন ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে অক্সিজেন সাপ্লাই ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত চিকিৎসকের আইসোলেশনের ব্যবস্থা, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, যাতায়াতের জন্য যশোর স্বাস্থ্য বিভাগ প্রায় ৪০ লাখ টাকা দেনা রয়েছে বলে সভায় জানান তিনি।

কমিটির সদস্য সচিব ও যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহিন বলেন, করোনা চিকিৎসায় জেলা কমিটি ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথভাবে কাজ করতে হবে। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির’ সভাপতি ও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, যশোরে করোনা চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা হবে। যশোরের অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করবে। দ্রুতই অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হবে। শুধু বন্ধ না, প্রয়োজনে এসব অবৈধ ক্লিনিক- ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিককে জেল-জরিমানা করা হবে। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম, এনএসআইয়ের উপ-পরিচালক কবির আহম্মদ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ প্রমুখ।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *