জিরো থেকে কোটিপতি নলতার নজরুল পাড় সেনাকর্মকর্তাসহ বিভিন্ন লোকের জমি আত্মসাৎ
কালিগঞ্জ উপজেলার নলতায় জিরো থেকে হিরো হয়ে কোটিপতির বনে যাওয়া ব্যাক্তিদের মধ্যে একজন জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম পাড়। কাশিবাটি গ্রামের সোবহান পাড়ের ছেলে নজরুল পাড় একসময় ছিল (বাইসাইকেল) হেলিকপ্টার চালক। এখন কোটিপতি নজরুল পাড়। বিগত ২০১৩-১৪ সালের সহিংসতার সময়ও অত্র অঞ্চলে তার অর্থায়নে চলেছে জামায়াতের তান্ডব। আর সেই নেতৃত্ব দিয়েছে তার ছেলে বিল্লাল পাড়। ঐ সময় তাকে বাড়ী থেকে অস্ত্রসহ র্যাবে গ্রাফতার করেছিল বলেও জানা যায়। তবে, এত অর্থ সম্পত্তির উৎস সাধারণ মানুষ জানতে না পারলেও, বর্তমানে জমিজমা দখলবাজ ও জমি আত্মসাৎকারী হিসাবে বেশ পরিচিত হয়েছে নজরুল পাড়। কারো জমিতে কোন প্রকার দ্বন্দ্ব বা ফাঁক-ফোকড় থাকলেই মাথা গুজে দখল করে নজরুল পাড়।
বহু সাধারণ মানুষকে নির্যাতিত হতে হয়েছে নজরুলের হাতে। কৌশলে অন্যের জমি অধীনে নিয়ে বিভিন্ন ফন্দিফিকির শুরু করে, তারপর তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই নজরুল পাড়সহ তার দুই চারজন পোশা সহচর মিলে নির্যাতন করে ভুক্তভোগীদের। এভাবে হাতিয়ে নেয় সহজ সরল ও সাধারণ মানুষের জমি। যে কারণে ভয়ে মুখ খোলে না অনেকেই। কিন্তু পাপ ছাড়ে না বাপকে। যার জন্য নজরুল পাড়কেও কয়েকবার থানা হাজতে থাকতে হয়েছে যদিও মোটা অংকের দেনদরারে মুক্ত হয় বলে জানা যায়। খোজখবর নিয়ে প্রাপ্ত তথ্যসূত্রে জানা যায়, কাশিবাটি ফুটবল মাঠের দক্ষিনে চাষাবাদের বিলান জমি ঘিরে বর্তমান নজরুল পাড় তুলেছে আলিশান বাড়ী।
বহু মানুষের জমি তার এই আয়াত্তে। আর এই বাড়ীটা করে ও জমিগুলো ঘিরেই চক্রে পড়েছে জমির মালিকরা। ঐ নবনির্মিত বাড়ীতে যাওয়ার কোন পথ না থাকলেও ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠ দখল করে রাস্তা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ঐ নজরুল। চাষাবাদের প্রায় ১২-১৪ বিঘা জমি এখানে আয়াত্তে নিয়েছে সে। এর মধ্যে কিছু জমি কিনেছে নজরুল পাড়। কাশিবাটি গ্রামের মানিক চন্দ্র, শেখ জাকির হোসেন, সোবহান, মালি গংদের থেকে কিছু জমি ক্রয় করে শেকড় পেতেছে সে। কিন্তু রেজাউল ইসলাম, শামছুদ্দিন, মিলন সরকার, রমজান আলী খা, আব্দুল লতিফ সহ অনেকের জমি লিজ ও জবরদখল করে আত্মসাতের চেষ্টা চালাচ্ছে নজরুল পাড়। এখন তাকে জমি লিখে দিতে হবে নতুবা জমিতে যাওয়া যাবে না।
যাতে করে বিপাকে পড়েছে খোদ জমির মালিকরা। আর এই যাতাকলে পড়েছেন স্বয়ং একজন সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার শেখ রুহুল আমিন। ঐ সেনা কর্মকর্তা চাকরির জন্য এলাকায় না থাকার সুবাদে তার জমিও কব্জা করে আত্মসাতের পায়তারায় মেতেছে নজরুল পাড়। জানা যায়, সম্প্রতি ব্রিগেডিয়ার রুহুল আমিনের পৈত্রিক কিছু জমির সাথে মিলন সরকারের নিকট থেকে ক্রয়কৃত ১৮ শতক এবং অন্যান্যদের নিকট থেকে কয়েক খন্ড জমি ক্রয় করেছেন। এলাকার মানুষের জন্য এই স্থানে একটি বৃদ্ধাশ্রম ও অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য। যার প্রস্তুতিও সম্পন্ন।
এলাকাবাসীর মধ্যেও খুশির বাতাস ছড়াচ্ছিল। কিন্তু সে গুড়ে বালি। তিনি পড়েছেন ভূমি দস্যু নজরুল পাড়ের কবলে। এভাবে তার যাতাকলে বহু মানুষ। তবে, এখন ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছে অনেকেই। সেনা কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ভুক্তভোগীরা তার কবল থেকে মুক্তি চায়। জননেত্রী শেখ হাসিনার আ.লীগ সরকারের সুশাসনের আমলে তার মত চিহ্নিত জামায়াতি দখলবাজকে আস্থাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করতে চায় ভুক্তভোগীরা। এজন্য জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়রা। এব্যাপারে অভিযুক্ত নজরুল পাড়ের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে নিজের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি কারো জমি দখল করিনি।
প্রায় ৫ বছর আগে আমি সেখানে ২২ শতক জমি কিনেছি এবং সেনা কর্মকর্তা মাত্র ৩/৪ মাস আগে ১৮ শতক জমি কিনেছেন। তিনি এখনও জমি বুঝে নেননি। একই খতিয়ানের এবং পাশাপাশি জমি হওয়ায় মুলত পথ নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। জামায়ত-শিবিরের সাথে কোন সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা এবং সহিংসতাকালীন তার নেতৃত্বে সহিংস তান্ডব চালানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জবাবে নজরুল পাড় বলেন, আমার নামে যেহেতেু এখনো কোন নাশকতার মামলা হয়নি, সেহেতু আমি জামায়ত করিনা বা সহিংসতা করিনি। আর কয়েক বছরের ব্যবধানে বাইসাইকেল চালিত হেলিকপ্টার চালক থেকে কিভাবে কোটিপোতি বনে গেলেন জানতে চাইলে নজরুল পাড় বলেন, একসময়ে আমি বাইসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী বইতাম, কিন্তু বর্তমানে আমার একাধিক মৎস্য ঘের রয়েছে। সেখাসে বাগদা ও গলদা চিংড়ী চাষ করি। সবকিছু আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন।