বরিশালসহ সারাদেশে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন’র আয়োজনে বিভিন্ন জেলার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারসহ উন্মুক্তস্থানে উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হলো বিশ্ব মেডিটেশন দিবস।
আজ (২১ মে) রবিবার নির্ধারিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও উন্মুক্ত স্থান গুলোতে ভোর ছয়টায় সমবেত হন হাজারো ধ্যানী মানুষ। “ভালো মানুষ ভালো দেশ স্বর্গভূমি বাংলাদেশ” এ প্রতিপাদ্য নিয়ে ধ্যানীরা ধ্যানমগ্ন হয়ে মেডিটেশনে অংশগ্রহন করেন। উপস্থিতগন আশাবাদ ব্যক্ত করেন, মেডিটেশন চর্চার ভেতর দিয়ে সুস্থতা ও প্রশান্তির বাণী সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে আমাদের দেশ একদিন রূপান্তরিত হয়ে উঠবে সুস্থ সবল কর্মদ্যোমী ও সমমর্মী এক জাতিতে।
এরই ধারাবাহিকতায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বরিশাল সেন্টারের উদ্যোগে সর্বমোট ১১টি উন্মুক্ত স্থানে আয়োজন করা হয় মেডিটেশন দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। এতে অংশ নেন চিকিৎসক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, গৃহিনীসহ নানা পেশার নানান বয়সী মানুষ। ভোর ছয়টায় মেডিটেশন দিবসকে স্বাগত জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এরপর প্রাণায়াম, উজ্জীবন, আলোচনা আর মেডিটেশন। আমাদের দেশে দিন দিন বাড়ছে মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা।
দেশবরেণ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বহুদিন ধরেই মেডিটেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করছেন। পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্যে বিদ্যমান চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজন মেডিটেশন এবং প্রেসক্রিপশনে নিয়মিত মেডিটেশনে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি যোগ-মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেছে। এ উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশের সর্বস্তরের চিকিৎসক মহল।
বিশ্বজুড়ে এখন প্রায় অর্ধশত কোটি মানুষ নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন করেন। শারীরিক, মানসিক,সামাজিক ও আত্মিক অর্থাৎ টোটালি ফিট থাকতে মেডিটেশন বা ধ্যানের কার্যকারিতা এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রমাণিত তাই অনেকেই মেডিটেশন কোর্সে আগ্রহী। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমান বিশ্বে সংক্রামক ব্যাধির চেয়ে অসংক্রামক ব্যাধির প্রকোপই বেশি। হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মেদস্থূলতা, বিষণ্নতা, অনিদ্রা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, স্ট্রেস ইত্যাদির ফলে মৃত্যুর হার ক্রমশই বাড়ছে। এসব অসুস্থতা থেকে মুক্ত থেকে সুস্থ কর্মক্ষম সুন্দর জীবন পেতে সচেতন মানুষ তাই ঝুঁকছেন এখন লাইফস্টাইল বা জীবনধারা পরিবর্তনের দিকে। আর লাইফস্টাইল পরিবর্তনের একটি বড় উপাদান হলো, দৈনন্দিন জীবনে মেডিটেশন বা ধ্যান চর্চাকে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রতিদিন অন্তত ২০-৩০ মিনিট ধ্যানচর্চায় হতে পারে প্রশান্ত ও সুস্থ জীবনের পথে একটি উল্লেখযোগ্য অনুঘটক সাথে বৈজ্ঞানিক খাদ্যাভ্যাস, যোগ ব্যায়াম, শারীরিক পরিশ্রম, ভালো ঘুম, ইতিবাচক চিন্তা, হাসি ইত্যাদি যুক্ত হলে তো কথাই নেই।
অসংক্রামক ব্যাধির দৌরাত্ম্য অনেকাংশে কমে যাবে এবং বেড়ে যাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, কর্মক্ষমতা ও প্রাণচাঞ্চল্যতা। যার ফলে সাশ্রয়ী হবে চিকিৎসা ব্যয়। যা ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও ফেলবে ইতিবাচক প্রভাব।উল্লেখ্য যে, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন গত তিন দশক ধরে মেডিটেশন কে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌছে দিতে নিরলস প্রচেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছে।