টুঙ্গিপাড়ায় চালকের অভাবে জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত মা ও শিশুরা

গর্ভবতী মা ও শিশুদের জরুরী সেবার জন্য দেয়া হয়েছে এ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু কোন চালক দেয়া হয়নি। তাই চালকের অভাবে এ্যাম্বুলেন্স অচল হয়ে পড়ে আছে। এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে জরুরী সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার মা ও শিশুরা। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মা ও শিশুদের জরুরী সেবায় গত বছরের গত ১৫ আগস্ট একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ্যাম্বুলেন্সটির মূল্য প্রায় ৪৩ লক্ষ টাকা।

কিন্তু এখন পর্যন্ত চালক নিয়োগ দেয়া হয় নি। চালকের অভাবে এ্যাম্বুলেন্সটি অচল হয়ে পড়ে আছে। টুঙ্গিপাড়া মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র সুত্রে জানাগেছে, প্রায় ৮ মাস আগে পাওয়া এ্যাম্বুলেন্সটির কোন চালক না থাকায় বেশ কিছু অংশ বিকল হয়ে যচ্ছে। ব্যাটারি বসে গেছে। ইতিমধ্যে একবার ব্যাটারি পরিবর্তন করা হয়েছে। এ্যাম্বুলেন্সটি পরিচর্যার অভাবে ধূলা বালিতে ভরে গেছে। তবে ইঞ্জিন সচল রাখতে সপ্তাহে একদিন এ্যাম্বুলেন্সটি চালু করে রাখা হয়। গিমাডাঙ্গা গ্রামের সোনালী আক্তার ও পাটগাতী গ্রামের শরীফা বেগম বলেন, প্রসব জনিত কারণে আমরা কয়েক দিন ধরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি রয়েছি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি এম্বুলেন্স আছে।

কিন্তু চালক নেই। এই অবস্থায় স্বাভাবিক ডেলিভারি না হলে আমাদের গোপালগঞ্জ অথবা খুলনা নিয়ে যেতে হতো। তখন আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকতো না। এমনকি মৃত্যুও হতে পারতো। আমরা গত ৫ মার্চ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে দুটি সন্তানের মা হয়েছি। এ জন্য আল্লাহ ও কেন্দ্র কর্মরতদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রসূতির স্বজন গিমাডাঙ্গা গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ উপজেলার হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স আছে। কিন্তু চালক নেই। এটা খুবই দুঃখজনক। এতে মা ও শিশুরা জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই উপজেলার জনগণের স্বার্থে দ্রুত একজন চালক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাই।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল আজিজ জানান, চালকের অভাবে এ্যাম্বুলেন্সটি নিয়মিত চলাচল না করায় কিছু অংশ খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। তখন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের অনুরোধে গোপালগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-পরিচালক সপ্তাহে একদিন টুঙ্গিপাড়া আসতে আমাকে নির্দেশ দেন। তাই সপ্তাহে একদিন এসে এ্যাম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন চালু করে রাখি। টুঙ্গিপাড়া মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মেহেরুন্নেসা বলেন, গর্ভবতী মা ও শিশুদের জরুরী সেবার জন্য এ্যাম্বুলেন্সটি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন চালক নিয়োগ দেয়া হয়নি।

তাই অত্যাধুনিক এ্যাম্বুলেন্সটি পরিচর্যা করার কেউ নেই। তবে এ্যাম্বুলেন্সের ইঞ্জিন সচল রাখতে সপ্তাহে একদিন একজন চালক আসেন। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মৌখিক ও লিখিতভাবে জানালেও চালক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এতে মা ও শিশুদের জরুরী সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক একেএম সেলিম ভূঁইয়া বলেন, টুঙ্গিপাড়া মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে দ্রুত একজন চালক নিয়োগ দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছি। এছাড়া সারা বাংলাদেশে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কিছুসংখ্যক চালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু করোনার জন্য সেটি বাস্তবায়ন করতে একটু সময় লাগছে। দ্রুত টুঙ্গিপাড়া কেন্দ্র অবশ্যই একজন চালক পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *