চিতলমারীতে বৃদ্ধ ঘের ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা, দুই শ্রমিক আটক

বাগেরহাটের চিতলমারীতে শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডল (৭২) নামের এক বৃদ্ধ ঘের ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুই শ্রমিক। শনিবার (১২ মার্চ) রাতে চিতলমারী উপজেলার খিলিগাতি এলাকায় ঘেরের পাড়ে নিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। তাঁকে হত্যার পরে বাড়ি এসে তাঁর স্ত্রী রমা মন্ডল (৬০) কেও বিদ্যুতের শক দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে অপ‚র্ব মন্ডল (২৫) ও সুব্রত হালদার (৩২) নামের ওই দুই শ্রমিক। এমন অভিযোগ করেছেন শৈলৈন্দ্রনাথ মন্ডলের পরিবার। বাড়িতে থাকা টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছেন পুলিশ। চিতলমারী থানা পুলিশ রবিবার (১৩ মার্চ) ভোর ৩ টা ১০ মিনিটের সময় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন। নিহত শৈলৈন্দ্রনাথ মন্ডল খিলগাতি গ্রামের মৃত মহেন্দ্রনাথ মন্ডলের ছেলে। তিন মেয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকায় শৈলন্দ্রনাথ মন্ডল ও তাঁর স্ত্রী বাড়িতে থাকতেন।

এদিকে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার রাতে চিতলমারী উপজেলার বাখেরগঞ্জ বাজার থেকে অপ‚র্ব মন্ডল এবং রবিবার সকালে কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড বাজার থেকে সুব্রত হালদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত অপ‚র্ব মন্ডলে বাবার নাম জ্যোতিশ মন্ডল এবং সুব্রত হালদারের বাবার নাম সুকেন্দ্র হালদার। তাঁদের দুইজনেরই বাড়ি মোরেলগঞ্জ উপজেলার লক্ষীখালী বটতলা গ্রামে। গেল বুধবার ফকিরহাট উপজেলার শ্রমিকের হাট থেকে ঘেরের কাজ করানোর জন্য ওই দুই শ্রমিককে বাড়িতে আনেন শৈলৈন্দ্রনাথ মন্ডল।

হত্যার শিকার শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডলের বড় জামাতা মিলন কুমার বাড়ই বলেন, ঘেরের কাজ করানোর জন্য বুধবার এই দুই শ্রমিককে ফকিরহাট থেকে বাড়িতে এনেছিল আমার শ্বশুর। শনিবার ঘেরের মাছ বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা বাড়িতে এনে রাখেন আমার শ্বশুর। ঘেরে কতটুকু পানি রাখবে এটা দেখানোর জন্য রাতে আমার শ্বশুরকে ঘেরের পারে ডেকে নেয় অপ‚র্ব ও সুব্রত। পরবর্তীতে হাত-পা বেধে ফল কাটা চাকু দিয়ে তাঁরা আমার শ্বশুরকে গলা কেটে হত্যা করে। শ্বশুরকে হত্যার পরে বাড়িতে এসে, আমার শ্বাশুরীকে বিদ্যুতের শক দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় শ্বাশুরীর ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তাঁরা পালিয়ে যায়। আমরা এই নির্মম হত্যাকান্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডলকে হত্যার ঘটনায় জড়িত দুই শ্রমিককে অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁরা এই হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এর সাথে অন্যকোন ঘটনা আছে কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখছে পুলিশ। নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *