নাজিরপুরে সরকারি জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের শ্রীরামকাঠী বন্দরের সুপারি পট্টি এলাকায় সরকারি খাস জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন বিকাশ সিকদার ও নারায়ন কুমার শাহা  নামে দুই ব্যক্তি।

দুই বছর ধরে পাঁচতলা ফাউন্ডেশনের ওই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বিকাশ সিকদার নিজেও সরকারি জমিতে ভবন নির্মাণের কথা স্বীকার করেছেন।

শ্রীরামকাঠী বাজর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাল দখল করে ৪ শতক সরকারি জমিতে দ্বিতীয় তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারী জমিতে অবৈধ স্থাপনা কেন নির্মান করেছেন জানতে চাইলে তারা  জানান, এখানে আমাদের রেকডিও জমি আছে ১ শতাংশ এবং সরকারি ডিসিআর প্রাপ্ত আছে .৫০ (আধা) শতাংশ বাকী ২.৫০ শতাংশ জমির কোন সরকারি বৈধতা নাই বলে স্বীকার করেণ।

পরবর্তীতে উপজেলা ভূমি অফিসে তল্লাসি করতে গেলে অফিসের নাজির সুভ্রত অধিকারী বলেন আদৌ তাদের নামে কোন সম্পত্তিই নাই্ এবং কোন ডিসিআরও নাই,  এদিকে শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তল্লাসি করলে দেখা যায় বিকাশ সিকদার ও নারায়ন কুমার শাহার ভোগ দখলকৃত অবৈধ স্থাপনার জায়গা নিশিকান্ত, পিতা-বেচারাম মিস্ত্রী এর নামে ১ শতাংশ রেকর্ড আছে, যাহার এস এ দাগ নং   ১৯৬/৪১৫, খতিয়ান নং ২৩৯,জে এল নং ৬৪   বিএস  খতিয়ান ৮৩ , আবার দেখা গেছে বিএস খতিয়ানে ওই ব্যক্তির নামে .৭৫ ( পৌনে এক) শতাংশ রেকর্ড বাকি টা খাস হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।

এদিকে বিকাশ সিকদার আরো জানান, গত বছরে অর্থাৎ (২০২০ সালে)  ২.৫০  শতাংশের  ভিটি বরাদ্দের জন্য নাজিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসে গেলে তখনকার সার্টিফিকেট পেশকার, মোঃ জাহিদ আমার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা গ্রহন করেণ এবং ওই জমিটুকুর ভিটি বরাদ্দ দিবেন বলে আস্বস্থ করেণ। পরবর্তীতে তিনি ওই জায়গার ভিটি বরাদ্দ না দিয়েই জেলার ইন্দুরকানি উপজেলায় বদলী হয়ে চলে যান, পরবর্তীতে আমি তার নিকট আমার দেওয়া ১ লাখ টাকা ফেরত চাইলে আজ দিব কাল দিব বলিয়া ঘুরাইতে থাকে এক পর্যায় সে আমাকে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেয়।  সার্টিফিকেট পেশকার, মোঃ জাহিদ যে টাকা নিয়েছে তার কোন স্বাক্ষী প্রমান আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পার্শ্ববর্তী দিপক বেপারী ও
বিনয় পোদ্দার নামে দুজন লোক স্বাক্ষী আছে।

এ ব্যাপারে ওই সার্টিফিকেট পেশকার মোঃ জাহিদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি বিকাশ সিকদার  ও নারায়ন শাহার নিকট হতে কোন টাকা গ্রহন করি নাই, তবে তিনি ভিটি বরাদ্দের জন্য আবেদন দিয়েছিলেন তা এখনও পেন্ডিং আছে আপনি অফিসে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেণ।

স্থানীয় সচেনত মহলদের দাবী প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে এত বড় অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে, কেন তারা এটা নিয়ে হস্তক্ষেপ গ্রহন করেণ না ?

এ বিষয়ে শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা (তহসিলদার) পরিমল কুমার দে বলেন,  এ্যাসিলান্ড স্যার ও ইউএনও স্যার বিষয়টি নিয়ে মিটিং এ আলোচনা করেছেন এবং ওই জায়গায় সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করবেন, তারা যে নির্দেশ দিবেন সে মোতাবেক কাজ করব।

সহকারি কশিনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে শুনেছি, এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আমি ৩ মাস হয়েছে নাজিরপুরে এসেছি, বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে দেখব, আমি  মোবাইলে কোন বক্তব্য দিব না, প্রয়োজনবোধে অফিসে আসেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ আব্দুল্লাহ্ সাদীদ বলেন, আমরা ওই ইউনিয়নের তহশিলদারকে পাঠাচ্ছি সে দেখে আলাদা,আলাদা ভাবে মাফ দিবে, কতটুকু ভিপি, কতটুকু খাস,পরিমাপ করার পরে সরকারী জমিতে তার ভবন থাকলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *