বাগেরহাটের চিতলমারীর পিতৃ পরিচয়হীন কিশোরের নীরব আর্তনাদ

পিতৃ

বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার ৭ নং সন্তোষপুর ইউনিয়নের দরিউমাজুড়ী গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের পিতৃ পরিচয়হীন এক ১৭ বছরের কিশোরের নিরব আর্তনাদ৷ ছেলেটার নাম নয়ন (পুটু) জন্ম দাতা মায়ের নাম কণিকা৷ ছেলেটির নানির কাছে থেকে জানা যায় আজ থেকে ১৭ বছর পূর্বে এই ছেলেটির জন্ম হয় তার অবিবাহিতা মেয়ের গর্ভে৷ তিনি আরো বলেন এই ছেলেটির জন্মের জন্য দায়ী দুজন ব্যাক্তির নাম বলেন ছেলেটির মা।

অভিযুক্ত এই দুই ব্যাক্তির মধ্যে একজন তখন ইন্ডিয়াতে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে বিষয়টিকে মেয়ের পরিবার গরীব হওয়াতে ধামা চাপা দেওয়া হয়, অভিযুক্তরা ক্ষমতাশালী হওয়াতে৷ তারপর থেকে ছেলেটি অসহায়ভাবে সমাজের ময়লা আর্বজনা হয়ে জীবন সংগ্রামে হার মেনে নিয়েই চলমান রয়েছে৷ আজ এই সমাজে অপরাধ না করেও অপরাধী হয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে চলছে পিতৃহীন ছেলেটির জীবন৷ জানা গেছে ছেলেটির মা বিয়ে করেছেন এবং স্বামীর সাথে আছেন বর্তমানে৷ আর এই অসহায় ছেলেটি একজনের বাড়িতে কাজের বিনিময়ে পেটে ভাতে থাকে৷ ছেলেটির সাথে কথা বলে সাংবাদিকরা জানতে পারেন ছেলেটি তার পিতৃ পরিচয় চায়৷

ছেলেটি বলে খাবার, টাকা পয়সা, সম্পদ এগুলো আমি কিছুই চাই না, আমি শুধু খাতায় যেন আমার বাবার নাম লিখতে পারি৷ কেউ যখন আমাকে জিজ্ঞাসা করে আমি যেন বলতে পারি কে আমার বাবা৷ আমি আমার বাবার পরিচয়ে সমাজে মাথা উচু করে চলতে চাই৷ এই বিষয় নিয়ে ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্রীবাস রায় বলেন আমি ও আমরা চাই এই ছেলেটি তার পিতৃ পরিচয় নিয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে চলুক। আমাদের সভ্য সমাজের সবার দাবি সে তার পিতৃ পরিচয় পাক। তাই এই লড়াই শুধু তার একার নয় এই লড়াই আমাদের সবার, আমরা সবাই তার পাশে আছি। তিনি আরো বলেন এই লজ্জা তার নয় এই লজ্জা আমাদের সমাজের।

ছেলেটার নিরব আর্তনাদ দেখে বা শুনে মনে চলে আসে একটাই কথা। আমি চিৎকার করিয়া কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার, বুকের ব্যথা বুকে জড়িয়ে নিজেকে দিয়েছি শুধু ধিক্কার৷ তাহলে সত্যিই কি? আজ এই ১৭ বছরের ছেলেটি অপরাধী? প্রশ্ন এই সমাজের কাছে রেখে গেলাম৷ আমরা সবাই জানি জন্ম থেকে কেউই পাপী বা অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহন করে না৷ তাহলে আজ আমাদের সমাজে কেন এই নির্মমতা? কেন আজ এই ছেলেটি সমাজের চোখে অপরাধী?



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *