Header Border

ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল) ২৫.৫১°সে
শিরোনাম:
খতিব মুফতি রুহুল আমিন আত্মগোপনে নই , অসুস্থতায় অনুপস্থিত বরিশাল নগরীর নাজিরের পুলে মাদক কেনাবেচা বন্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন।। শিক্ষকদের তালাবদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি ফকিরহাটে ইজিবাইকের সাথে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত-৩ পিরোজপুরে সাংবাদিকদের সাথে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মতবিনিময় সভা গোপালগঞ্জে বিএনপি নেতার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ এক আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে গোপালগঞ্জে ছাত্রজনতার বিক্ষোভ কাল শপথ, ড. ইউনূসকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব : সেনাবাহিনীর প্রধান ১১ দফা দাবীতে গোপালগঞ্জে পুলিশের বিক্ষাভ টুঙ্গিপাড়ায় নানা আয়োজনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৪ পালিত

৮ হাজার টাকার ভ্যাকুয়াম ক্লিনার মেশিন সরকারি কলেজে গিয়ে হলো ২৭ হাজার টাকা

বাজারে মিয়াকো কোম্পানির একটি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার মেশিন অর্থাৎ ফ্লোর ধুলাবালি শোষণ ও পরিস্কার যন্ত্র বিক্রি হয় আট হাজার পাঁচশ টাকায়। সেই একই মডেলের ভ্যাকুয়াম ক্লিনার সরকারি একটি কলেজের জন্য কেনা হয়েছে ২৭ হাজার আটশ পঞ্চাশ টাকা দরে।যার সঙ্গে বাজারের মুল্য আকাশ পাতাল পার্থক্য।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া নতুন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের জন্য মিয়াকো কোম্পানির এমন ৪টি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ক্রয় করে দাম দেখানো হয়েছে ১ লক্ষ ১১ হাজার চারশত টাকা । এছাড়াও চোখ কপালে উঠার মত দাম দেখানো হয়েছে অন্যান্য মালামালে। সাতশ টাকার ফুটবলের দাম দেখানো হয়েছে চব্বিশশো টাকা ।২০ টাকার বাল্বের (বৈদ্যুতিক লাইট) দাম দেখানো হয়েছে ৪০০ টাকা দর। স্থানীয় বাজার থেকে সিঙাড়া কিনে ভাউচারে বিরিয়ানি দেখানো হয়েছে। ক্যাশমেমো দেখানো হয়েছে গাজীপুরের একটি হোটেলের।

এমন বেশ কয়েকটি খাতে মালামাল ক্রয় করে বেশি দামের ভুতুরে ও ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গেছে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল হকের বিরুদ্ধে।

তবে এবিষয়ে মানতে নারাজ অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ নুরুল হক। তিনি বলছেন, সব কিছুর দাম যাচাই বাছাই করে, কলেজের ক্রয় কমিটির মতামত নিয়েই কেনা হয়েছে।কিন্তু ক্রয় কমিটির সদস্যরা বলছেন, মালামাল ক্রয়ের বিষয়ে কিছুই জানেন তারা। অধ্যক্ষের কথায় কাগজে সাক্ষর করেছেন। এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাষ্ট্রের অর্থ আত্মসাৎ এর সুকৌশল এটি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগে থেকেই চুক্তি থাকে এসব কর্মকর্তাদের।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ২০২২- ২০২৩ অর্থ বছরের আর্থিক ব্যায়ের সকল বিল ভাউচারের কপি এসেছে ঢাকা পোস্ট এর হাতে। অনুসন্ধান করে দেখা যায় প্রতিটি মালামালে বাজারের চাইতে বেশি দাম দেখানো হয়েছে । প্রতিটি মালামালে ১০ – ৩০ শতাংশ দর বেশি দেখানো হয়েছে। আবার কোন কোন মালামালে কয়েকগুন বেশি দর দেখানো হয়েছে।আবার সিঙাড়া ও কলা খাইয়ে বিরিয়ানির বিল ভাউচার করা হয়েছে। আর এসব বিলের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অধ্যক্ষ নিজেই। এছাড়াও কাজ না করিয়ে তিন ধাপে শ্রমিক মজুরির বিল ভাউচার করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে

কলেজ সুত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে কারিগরী মানব সম্পদ গড়ার লক্ষ্যে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে কলেজটি।কলেজটির ২০২২ -২০২৩ অর্থ বছরের বাজেট ছিল ৬৩ লাখ টাকা। চলতি মাসের জানুয়ারীতে নতুন ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন ভবনের জন্য ক্রীড়া সামগ্রী, শিক্ষা ও শিক্ষণ উপকরণ, কাচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশ ও রাসায়নিক দ্রব্যদি কেনা হয়।

আর এসব মালামাল কেনার জন্য ওই কলেজের অধ্যক্ষ কে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি ক্রয় কমিটি গঠন করা হয়।পরে দরপত্র আহ্বান না করেই নিজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গাদি চুক্তিতে ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৫ টাকার মালামাল ক্রয় করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ নুরুল হক। যেখানে বাজার মুল্যের চাইতে প্রতিটি মালামালে ১০-৩০ শতাংশ দাম বেশি দেখানো হয়েছে। তিন গুণ বেশি দাম দেখানো হয়েছে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার মেশিনের। যার একটির দাম দিয়ে তিনটি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার মেশিন ক্রয় করা যায়। এছাড়া ২০ টাকার বাল্ব ৪০০ দর দেখানো হয়েছে। ৭শ টাকার ফুটবল দাম দেখানো হয়েছে ২৪০০ টাকা।


এছাড়াও একই অর্থ বছরে টেন্ডার ছাড়া ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ব্যয় দেখানো হয়েছে বিভিন্ন খাতে। যার মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার সামগ্রী ক্রয়, কম্পিউটার মেরামত,পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী ক্রয়, আসবাবপত্র মেরামত, আপ্যয়ন বিল ও অনিয়মিত শ্রমিক মজুরি বিল ।

এরমধ্যে গাজীপুরের একটি হোটেলের ক্যাশমেমো দিয়ে ৩ টি আপ্যয়ন বিল করা হয়েছে।তাতে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা বিল করা হয়েছে।

নতুন কম্পিউটার মেরামত দেখিয়ে বিল ১০ হাজার টাকা বিল ভাউচার করা হয়েছে , ১৫শ টাকার ওয়াইফাই রাউটার সাড়ে ছয় হাজার টাকায় ক্রয়। এছাড়া আকাশচুম্বী দামে কম্পিউটার সামগ্রী ক্রয়, ৩শ টাকার পাপোশ ১হাজার টাকা দাম দেখানো হয়েছে। এছাড়াও শ্রমিক দিয়ে কাজ না করিয়ে নিজে সাক্ষর করে ৪০ হাজার টাকার শ্রমিক মজুরি (অনিয়মিত) বিল ভাউচার করা হয়েছে। এমন ১০ টি খাতে মালামাল ক্রয়ে ভুয়া ও বেশি দাম দেখিয়ে ভুতুড়ে বিল ভাউচার করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন কলেজটির অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ নুরুল হক।

কলেজটির ইনেসটেক্টর (সংযুক্ত) ও ক্রয় কমিটির সদস্য উত্তম রায় বলেন, আমি ওই ক্রয় কমিটির সদস্য। অধ্যক্ষের কথায় আমি সদস্য হয়েছি। কিন্তু মালামাল ক্রয়ের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। অধ্যক্ষ নিজের মনমত করে ঠিকাদারের কাছ থেকে এসব মালামাল ক্রয় করেছেন। ক্রয় কমিটির সদস্য হিসেবে আমাকে সাক্ষর করতে বলা হয়েছে। আমি সাক্ষর করেছি। মালামাল ক্রয়ের সময় আমি সামনে ছিলাম না।

ক্রয় কমিটির অন্য এক সদস্য ও কলেজের সহকারী শিক্ষক নওরোজ ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের এক কর্মকর্তা বলেন, অধ্যক্ষ যোগদান করেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন মালামাল ক্রয়ে। তখন তিনি তাড়াহুড়ো করেই দুইটি ক্রয় কমিটি গঠন করলেন। একটি হলো টেন্ডারের মাধ্যমে মালামাল ক্রয় কমিটি। আর একটি হলো সরাসরি কলেজ কতৃপক্ষ ক্রয় কমিটি। দুইটা কমিটিরই প্রধান অধ্যক্ষ। এরপর দরপত্র আহ্বান না করেই। নিজের নামমাত্র ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে মালামাল ক্রয় করেন। আগে থেকেই ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অধ্যক্ষের চুক্তি ছিল প্রতিটি মালামালে ১০ – ৩০ শতাংশ কমিশন তাকে দিতে হবে। যে কারনে কমিটির কাউকে সঙ্গে না নিয়েই মালামাল ক্রয় করেন। পরে তাদের (ক্রয় কমিটির সদস্য) নির্দেশ দেওয়া হয় সাক্ষর করার। এভাবেই তিনি সুকৌশলে ভুতুড়ে ও ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ করেন।

এছাড়াও বিভিন্ন দিবস ও মিটিংয়ে আপ্যয়ন বিল ভাউচার করা হয়েছে। যেখানে সিঙারা ও কলা খাইয়ে বিরিয়ানি দেখানো হয়েছে। তিনি বিভিন্ন হোটেল থেকে খালি ক্যাশমেমো সংগ্রহ করে তাতে বিরিয়ানি ও প্যাকেটের পরিমান দেখিয়ে বিল ভাউচার করে টাকা নিজের পকেটে ভরেছেন। যার প্রমান রয়েছে গাজীপুরের একটি হোটেল থেকে বেশ কয়েকবার বিরিয়ানি কেনা। আমার কথা হচ্ছে যেহেতু দুি মিনিটের পথ পাড়ি দিলেই বিরিয়ানির দোকান রয়েছে। সেখানে গাজীপুর থেকে বিরিয়ানি কিনে কেন আনতে হবে। এছাড়া তিনি ১৫০০ টাকার ওয়াইফাই রাউটার সাড়ে ছয় হাজার টাকা দাম দেখিয়েছেন। আর এসব খাতে আকাশচুম্বী দামে মালামাল ক্রয় করে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন অধ্যক্ষ।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ নুরুল হক বলেন, যেহেতু ঠিকাদারের মাধ্যমে গাদিচুক্তিতে কেনা হয়েছে তাই কোনটায় দাম বেশি ধরা হয়েছে আবার কোনটায় দাম কম ধরা হয়েছে।

বিল ভাউচারে প্রতিটি মালামালে তো দেখছি দাম বেশি কোনো মালামালে দাম কম ধরা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, তখন আমি খেয়াল করি নাই, কিন্তু এখন দেখছি প্রতিটি মালামাল বাজারের চাইতে বেশি দাম ধরেছে। এখন আর কি করার কেনা তো হয়ে গেছে।

তবে বিল ভাউচার দেখানোর আগে অধ্যক্ষ সবকিছু অস্বীকার করে বলেন, সব কিছুর দাম যাচাই বাছাই করে, কলেজের ক্রয় কমিটির মতামত নিয়েই কেনা হয়েছে।

এবিষয়ে অর্থনীতিবিদ খসরুল কবীর বলেন, এটি রাষ্ট্রের অর্থ আত্মসাৎ এর সুকৌশল । ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগে থেকেই চুক্তি থাকে এসব কর্মকর্তাদের। সেখান থেকে কয়েক শতাংশ অর্থ নিজের পকেটে নিয়ে নেয় সেই সব কর্মকর্তা। এটা রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় ও আত্মসাৎ এর সামিল।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, ভুয়া ভাউচার ও দাম বেশি দেখিয়ে ভুতুড়ে বিল ভাউচার করে যদি কোন কর্মকর্তা অর্থ নিজের পকেটে ভরে তাহলে আমি মনে করি সেটা রাষ্ট্রের অর্থ আত্মসাৎ এর সামিল। এমন বহু কর্মকর্তা রয়েছে যারা এমন বিল ভাউচার করে রাষ্ট্রের অর্থ আত্মসাৎ করেছে। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে দাবি থাকবে এসকল কর্মকর্তাদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনার।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

খতিব মুফতি রুহুল আমিন আত্মগোপনে নই , অসুস্থতায় অনুপস্থিত
ফকিরহাটে ইজিবাইকের সাথে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত-৩
জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে গোপালগঞ্জে ছাত্রজনতার বিক্ষোভ
১১ দফা দাবীতে গোপালগঞ্জে পুলিশের বিক্ষাভ
টুঙ্গিপাড়ায় কিডনি নষ্ট একমাত্র মেয়েকে বাঁচাতে সবার কাছে সাহায্যের জন্য আকুতি জানিয়েছেন চা বিক্রেতা
পিতার বাল্যকালের স্কুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যার্থনা জানাতে অপেক্ষায় শিশুরা

আরও খবর

İstifadəçi rəyləri Pin Up casino seyrək göstərilən xidmətlərin keyfiyyətini təsdiqləyir. azərbaycan pinup Qeydiyyat zamanı valyutanı seçə bilərsiniz, bundan sonra onu dəyişdirmək mümkün xeyr. pin-up Bunun üçün rəsmi internet saytına iç olub qeydiyyatdan keçməlisiniz. pin up Además, es de muy alto impacto y de una sadeed inigualable. ola bilərsiniz