স্ত্রীকে নিয়ে হজ্ব পালন হলো না এমদাদের, সকলকে কাঁদিয়ে চলে গেল না ফেরার দেশে

স্ত্রীকে নিয়ে হজ¦ পালন করা হলোনা এমদাদের সকলকে কাাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। গত সোমবার (৪ অক্টোবার) সকাল ৯ টায় তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারের মো. এমদাদ শেখ (৪০) পেশায় ছিলেন একজন খ্যাতি সম্পন্ন বাবুর্চি এবং ভাঁজা বিক্রেতা।

পরিশ্রমি এই যুবক সমাজে একজন আদর্শবান মানুষের পরিচয় রেখে নিজ পাঁয়ে দাঁড়ালেও তাঁর শেষ আশাটি পুরণ হলো না। তাঁর ইচ্ছে ছিলো স্ব-স্ত্রীক হজ্বব্রত পালন করা। আশানুরুপ হজের টাকা ব্যাংকে জমা করতে ছিলেন। কিন্তু সে আশা আর পুরোন হলো না।

এমদাদের ভগ্নিপতি জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক মো. ইকরামুল হক মুন্সি বলেন, আমি তখন বাড়িতে। একটু পরেই গোসল সেরে খাওয়া দাওয়া করে আমার অফিসের দিকে রওয়ানা হবো। এমন সময় মোবাইলে সহকর্মী সাংবাদিক পংকজ মন্ডল জানাল একরাম ভাই আপনি কোথায়, আমি বললাম বাড়িতে। তখন বললো এই মাত্র আপনার শ্যালক এমদাদ মারা গেছে। সংবাদটি এসময় আমার স্ত্রীর কানে পৌঁছে যায়। সে হাউ-মাউ করে কেঁদে উঠলো। যে বোন ছোট ভাইটিকে কোলে করে, বুকে নিয়ে আদর- ¯েœহ, ভালো বাসা দিয়ে মানুষ করেছে। সে ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ বড় বোনের কানে এভাবে ভেসে আসলে কি ধরনের পরিস্থিতির অবতারনা হয়; তা হয়তো বিবেকবান সকল মানুষই বুঝবেন।

ভাইয়ের শোকে মুহ্যমান আমার স্ত্রীকে নিয়ে দ্রƒত ছুটে গেলাম শ্বশুরবাড়ির শিবপুর গ্রামে। সেখানে এসে দেখি স্বজনদের কান্নাররোল পড়েছে। আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠছে। চার দিকে শোকের ছায়া নেমে আসছে। মৃতের স্ত্রীসহ পরিবারের কাউকেও শান্তনা দেবার ভাষাটুকু হারিয়ে ফেলেছি। বড় দুলাভাই হিসেবে নি¤œবিত্ত এই পরিবারটির কয়েকযুগ পেছনের সকল স্মৃতিগুলো আমাকে যেন বুকের মাঝে পাথর চাপা দিচ্ছিল তখন। এদের অসময় এবং সু-সময়ের সকল স্মৃতি গুলো যখন হিসাব করছিলাম ! তাঁর ইচ্ছে ছিলো স্ব-স্ত্রীক হজ্বব্রত পালন করা। আশানুরুপ হজের টাকা ব্যাংকে জমা করতে ছিলেন। কিন্তু সে আশা আর পুরোন হলো না।

এলাকাবাসিরা জানান, নিষ্ঠা এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে জাতি-ধর্ম ভেদাভেদ ছাড়াই এক নজর তাঁর মরদেহটি দেখতে ছুঁটে আসেন অগনিত নারী-পুরুষ। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। প্রতিকুল আবহাওয়া বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে জানাজার নামাজে শরিক হন শতশত ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। পিতৃহারা এই যুবক ভাই, বোন, দুলাভাই, ভাগ্নে –ভাগ্নিদের জীবনের সকল প্রকার ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতেন।

বৃদ্ধা মায়ের প্রতিছিলো তার অঘাত ভক্তি শ্রদ্ধা ভালোবাসা। ধর্মীয় সকল কার্যক্রমে তার হাত ছিলো প্রসারিত। ৪০ বছরের যুবক মো: এমদাদুল হক শেখ চিতলমারী উপজেলার মরহুম সাকাওয়াত হোসেনের ৪ মেয়েও ২ ছেলের মধ্যে চতুর্থ সন্তান।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *