সরকারি ভাবে ধান ক্রয়ের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি নওগাঁ খাদ্য অধিদপ্তর


গত আমন মৌসুমে নওগাঁয় বন্যার কারণে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে কম ধান উৎপাদন হওয়ায় এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় মেয়াদ বাড়িয়েও এক ছটাক ধান কিনতে পারেনি জেলা খাদ্য অধিদপ্তর। সরকারীভাবে ধান চাল ক্রয়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী। এ সময়ের মধ্যে ধান ক্রয় শুরু করতে না পারায় আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত এই সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে জেলা খাদ্য অধিদপ্তর ।
নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জিএম ফারুক পাটোয়ারী জানান, জেলায় আমন মৌসুমের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ হাজার ১৭৮ মেট্টিক টন। বন্যার কারণে ধান উৎপাদন কম হওয়ায় এপর্যন্ত এক ছটাক ধান ক্রয় করা সম্ভব হয়নি ।
অন্যদিকে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ হাজার ২১৭ মেট্টিক টন। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেনা হয়েছে ৩হাজার ৩৪৪ মেট্টিক টন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সুত্রে জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর নওগাঁয় সরকারীভাবে ধান এবং ১৫নভেম্বর চাল ক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হয়। সরকারীভাবে ধান কেনার কথা রয়েছে প্রতিকেজি ২৬ টাকা, সেদ্ধ চাল ৩৭ টাকা ও আতপ চাল ৩৬ টাকা দরে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছিল। তবে বন্যার ফলে মাঠের ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ হাজার ৯৮৬ হেক্টর জমি। ফলে উৎপাদন হয়েছে ১ লক্ষ ৯১ হাজার ৬৬৪ হেক্টরে। হাসকিং ও অটোমেটিক রাইস মিলের বেশ কয়েকজন মালিক জানিয়েছেন, এবার বাজারে ধানের দাম বেশী, ফলে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করতে গেলে প্রতি কেজিতে প্রায় ৭ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। ফলে ইচ্ছে থাকা সত্বেও সরকারি গুদামে চাল দিতে পারেননি তারা। অপরদিকে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের আবদার রক্ষা করতে হয়, সেটাও এক ধরনের সমস্যা বলে জানান তারা। জেলার একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে গেলে শুকনা ধানকেও বলা হয় ভেজা। টাকার জন্য ব্যাংকে ঘুরতে হয় বেশ কয়েক দিন। সঙ্গে গাড়ি ভাড়া ও শ্রমিক খরচ লাগে। এছাড়াও নানা অজুহাত দেখান খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার সংবাদকে বলছেন, ৩২ হাজার ২১৭ মেট্টিক টন চাল দিতে গেলে তাদের লোকসান হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। কারণ প্রতি মণ ধান ১২০০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। প্রতি কেজি চালের দাম পড়ছে ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা। সরকারি খাদ্যগুদামে চাল দিলে প্রতি কেজিতে মিলারদের লোকসান গুনতে হবে ৬ থেকে ৭ টাকা।