গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে ও ক্যাম্পাসের দক্ষিণ পাশে অরক্ষিত থাকায় ঘটছে একের পর এক নানা অঘটন।
গোপালগঞ্জে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ -এর একাডেমিক কার্যক্রম চলতি বছরের গত ২১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে।
আবাসিক ভবন সমূহ ইতোমধ্যেই হস্তান্তর করা হয়েছে এবং আবাসিক ভবনসমূহে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বসবাসও শুরু করেছেন। সম্প্রতি ক্যাম্পাসের মধ্যে বেশ কিছু বখাটে ছেলেদের আনাগোনা লক্ষ করা যাচ্ছে।
প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা কর্মী ও জনবলের অভাবে এবং ক্যাম্পাসের দক্ষিণ পাশে অরক্ষিত থাকায় ঘটছে একের পর এক অঘটন।
অধিকাংশ ভবনের পোর্চের নিচে তাস খেলা সহ ছিঁচকে চোর থেকে শুরু করে মাদকসেবী সহ বখাটেদের নিরাপদ অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে উঠেছে এই ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে অস্থায়ীভাবে বসবাসরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী যেন এদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ।
কোনভাবেই প্রতিহত করা যাচ্ছে না এদের কর্মকাণ্ড। বিশাল জায়গাজুড়ে স্থাপিত এই প্রকল্পের শেষ মুহূর্তের বেশ কিছু কাজ এখনো চলমান রয়েছে।
যার ফলে সম্পূর্ণভাবে হস্তান্তর হয়নি এ প্রতিষ্ঠান। আগামি ডিসেম্বর মাসে হস্তান্তরের কথা রয়েছে। শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের দক্ষিণ দিকে বেশ কিছু অংশ খোলা ও অরক্ষিত রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা কর্মী না থাকার সুবাদে ওই পাশ দিয়ে অবাধে অসামাজিক লোকজন এই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অনৈতিক কর্মকান্ড সংঘটিত করে নির্বিঘ্নে বের হয়ে যায়।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেখ সাহেরা খাতুন মেডিকেল কলেজের নির্মাণাধীন ভবনের একটি কক্ষে অসামাজিক কর্মকান্ড চালানোর খবর পেয়ে লোকজন সন্দেহভাজন এক নারী ও একজন পুরুষকে কক্ষে তালা বদ্ধ করে কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়।
পরে সেখানে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জাকির হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম হাসানুজ্জামান, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক ও গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. অসিত কুমার মল্লিক সহ অন্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এ ঘটনার সত্যতা পান।
পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানান। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ সন্দেহভাজন ওই নারী ও পুরুষ উভয়কে আটক করে থানায় নিয়ে যান। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম হাসানুজ্জামান বলেন, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের এ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
প্রকল্পের কিছু অংশ ইতোমধ্যেই হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিটা অচিরেই আমরা কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করবো। ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষ অচিরেই নিরাপত্তাকর্মী সহ প্রয়োজনীয় জনবল নিযুক্ত করবেন বলে শুনেছি। এছাড়া মেঘা এ প্রকল্পের দক্ষিণ পাশে প্রস্তাবিত গেটটি নির্মাণ করা হলে ওই এলাকাটি সম্পূর্ণ সংরক্ষিত থাকবে। দক্ষিণ পাশে প্রস্তাবিত গেটটি দ্রুত নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে। এদিকে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে একের পর এক অসামাজিক কর্মকান্ড বেড়ে যাওয়ায় পুলিশি টহল জোরদার করতে জোর দাবি জানান ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী।