শেখ সাইফুল ইসলামের করোনা জয়ে অভূতপূর্ব সাফল্যের বাস্তবতা

অজস্র গুজবের ভিড়ে করোনা মোকাবেলায় পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ, সত্যিগুলোও হারিয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। করোনা সংক্রান্ত জটিল থেকে জটিলতর তথ্য আর নির্দেশনায় প্লাবিত বাংলাদেশীদের ফেইসবুক। আশানরুপ সংবাদ তেমন একটা দেখা যায় না। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশেও দ্রুতগতিতে বাড়ছে মৃত্যু ও সংক্রমণ। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। প্রিয়জনকে হারানোর কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে আকাশ-বাতাস। আর ঠিক সেই মুহূর্তে কঠিন এক বাস্তবতার সম্মুখিন হয়েও সফলতা অর্জন করেছে সাবেক টুঙ্গিপাড়া ছাত্রলীগের সভাপতি, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি, শেখ সাইফুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘ দিন দলীয় কার্যক্রম এবং সাধরণ জনগনের পাশে না থাকতে পেরে খুবই দুঃখ প্রকাশ করেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা তার অনুপস্থিতে ভারাক্রান্ত মনে বলেন, শেখ সাইফুল ইসলাম কে আমাদের মাঝে গত কয়েক দিন না পেয়ে দলিয় কার্যক্রম যেন থমকে ছিল। একজন যোগ্য নেতার অনুপস্থিতি কতটা কষ্টদায়ক শেখ সাইফুল ইসলাম এর অনুপস্থিতে আমরা বুঝতে পেরেছি। তার সুস্থ্যতার খবরে আমরা সকলে আনন্দিত এবং মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। সেখ সাইফুল ইসলাম কে নিয়ে আমরা আবারও নতুন উদ্দমে কাজ শুরু করব।

প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাস জয় করেছেন তিনি। দীর্ঘ সময় হোম আইসলুশনে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং অপেক্ষার প্রহর গুনতে ছিলেন। অপেক্ষায় ছিলেন নতুন এক ভোরের দেখা পাওয়ার। গতকাল বুধবার পুনরায় তার করোনা পরীক্ষার পর ফলাফল নেগেটিভ আসে। নিজের করোনা জয়ের গল্প দৈনিক শতবর্ষকে জানিয়েছেন শেখ সাইফুল ইসলাম । তিনি বলেন, সন্দেহের যের ধরে কিছু দিন আগে আমি নমুনা দেই। যদিও আমার কোনো ধরনের লক্ষণ ছিল না। পরে হটাৎ করোনা পরীক্ষার ফল পাই এবং জানতে পারি আমি করোনায় আক্রান্ত।

কোভিড-১৯ টেস্টের রেজাল্ট আসে আনুমানিক সন্ধ্যার সাতটার দিকে। দু:শ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটতে থাকে। পরিবারের অন্য সদস্যদের জানানোর পর তারা স্তব্ধ হয়ে গেলেন। নিজের আত্মবিশ্বাসের বর্ণনা দিয়ে সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন, এরপরই পণ করলাম, ভয়কে জয় করতে হবে। মনকে শক্ত করলাম। যোগাযোগ করলাম চিকিৎসকের সাথে। যেহেতু আমার কোনো লক্ষণ ছিল না, তাই আমাকে তিনি কোনো ওষুধ দেননি। শুধুমাত্র ভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলে দেন কীভাবে গরম পানি ব্যবহারে সুস্থ হয়ে উঠতে পারি আমি।’ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ‘বি’ ও ‘ডি’ ক্যাপসুল এবং সিভিডসহ ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার খেতে থাকি। তার নেয়া বিভিন্ন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে অনিক বলেন, ‘মাল্টা ও আপেল খাই প্রতিদিন দুই বেলা। বেশি করে আদা-লবঙ্গ দিয়ে চা বানিয়ে দিনে ৩-৪ বার খেয়েছি। আদা, দারচিনি, এলাচ, রসুন, লবঙ্গ দিয়ে পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে গরম ভাপ নিতাম দিনে দুবার (সর্বোচ্চ ১০ মিনিট করে) এবং চায়ের মতো খেতাম দুই বেলা।

দিনে একবার কালোজিরা এবং মধু মিশিয়ে খেতাম। গলা ভেজা রাখতে খেতাম লবন মাখানো আদা। গোসলও করতাম হালকা গরম পানি দিয়ে।’ ‘এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেইনি। প্রতিদিন ঘর জীবাণুমুক্ত করতাম স্প্রে দিয়ে। আর মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য আমি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি বিভিন্নভাবে।’ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, সকাল থেকেই দিনভর গলা ভেজা রাখতাম। এক কথায় নিজের সাহস ধরে রাখতে ভুলে যেতাম যে আমি করোনায় আক্রান্ত একজন রোগী। এটা ঠিক যে কখনোই কোনো শারীরিক সমস্যা হয়নি আমার, তাই স্বাভাবিক থাকতে পেরেছি সহজে, বলেন তিনি।

শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন করোনা আক্রান্ত হলে ভয়ের কিছু নেই। কারণ ভীত হয়ে পড়লে ক্ষতি হবে আরও বেশি। তাই সতর্ক এবং সাহসী হতে হবে। তাহলেই মিলবে সুস্থতা। ‘যেমনটা এই মুহূর্তে আমি অনুভব করছি। আর ঠিক ১৪ দিন পর পরীক্ষা টেস্ট করিয়েই আমার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য যে, আমি সুস্থ হয়েছি। এরপর তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জানান টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ, পৌর আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী, টুঙ্গিপাড়াবাসী সহ তার সকল শুভাকাঙ্খীর দের।। তিনি বলেন সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত এবং টুঙ্গিপাড়াবাসীর অন্তঃস্থলের দোয়া এবং তাদের অপার ভালবাসায় আমি আজ সুস্থ। আমি দেখা পেয়েছি এক নতুন ভোরের। টুঙ্গিপাড়াবাসী সর্বদা আমাকে ভালবেসে এসেছে করোনার এই মহা বিপদের সময় ও যার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সত্যিই আমি আজ কৃতজ্ঞ টুঙ্গিপাড়াবাসীর কাছে। সবশেষে ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব করোনাভাইরাসকে শক্তভাবে নিতে এবং কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হলে নিয়ম মেনে নিজের যত্ন নিতে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সুরক্ষা সামগ্রী সবাইকেই ব্যবহার করতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে সকল করোনা রোগীকে সাহসের সাথে ‘করোনা’ জয়ের আহ্বান জানান তিনি।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *