শারিরীক প্রতিবন্ধী ও অক্ষমদের প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়ে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবো -বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেছেন, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারী একযোগে সারাদেশে (কোভিড-১৯) গনটিকার বিশেষ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী ঐদিনে সারাদেশের সঙ্গে বরিশাল নগরীতেও করোনার (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত যারা করোনার (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন নিতে পারেননি তারা সহজেই এই দিনে নিতে পারবেন। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারীর কোভিড-১৯ গনটিকা কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশন আওতাধীন এলাকায় নির্ধারিত সাতটি কেন্দ্রের পাশাপাশি ১৫টি মোবাইল টিম নগরী জুড়ে কার্যক্রম পরিচালিত করবে। পাশাপাশি যারা বৃদ্ধ-অসুস্থ, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও চলাচলে অক্ষম তাদেরকে প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়ে টিকা দেওয়া হবে যার সম্পূর্ণ প্রস্তুতিও আমরা নিয়েছি।গত মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোডস্থ বিসিসি মেয়রের নিজ বাসভবন সেরনিয়াবাত ভবনের উঠানে আয়োজিত কোভিড-১৯ গণটিকা কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষে সকল শ্রেনীর পেশাজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভায় বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এ কথা জানান। তিনি বলেন, বরিশাল মহানগরে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় (ছয়) ৬ লাখের মতো আর ভোটার আছেন প্রায় ২,৪১,০০০/-(দুই লক্ষ একচল্লিস হাজার)। প্রত্যেকের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আমরা মোটামুটি অর্জন ও নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। আর হয়তো অল্পকিছু সংখ্যক বাকি আছে হয়তো কেউ এখানে থাকেন না। তবে যারা আমাদের বিসিসির ও বরিশাল জেলার ভোটার না কিংবা অন্য জেলা থেকে এসেছেন, তাদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে না পারলে সার্থকতা নেই।আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি গণটিকার কার্যক্রম সফল কারার ক্ষেত্রে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ব্যপক প্রচার প্রচারণা চলছে।সর্বস্তরের সাধারন জনগনকে ভ্যাকসিন নিতে সবাই মিলে উৎসাহ দিতে হবে। বিশেষ করে স্থানীয় গনমাধ্যম ও মিডিয়ার বড় ভূমিকা রাখতে হবে। উক্ত মতবিনিময় সভায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের ডাঃ খন্দকার শুভ্র বলেন, প্রতিটি মোবাইল টিমে দু’জন করে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য ও তিনজন স্বেচ্ছাসেবকসহ সর্বমোট পাঁচ জন করে থাকবে। আর এসব মোবাইল টিম লঞ্চঘাট,বাস টার্মিনাল, চকবাজার,বাজার আদালত প্রাঙ্গণ ও কলোনি গুলোতে গুরুত্ব দিয়ে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এদিকে বরিশাল জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মারিয়া হাসান বলেন,বরিশাল বিভাগ ও অন্যান্য জেলার মধ্যে শুধুমাত্র বরিশাল সিটি করপোরেশন ভ্যাকসিন কার্যক্রমে একধাপ এগিয়ে রয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশন এরইমধ্যে তাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।তারা এ পর্যন্ত ১২৪% লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিশ্চিত করেছেন। এখন তারা আমাদের সার্বিক সহায়তা দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভ্যাকসিন নেওয়ার হার ১০৫ দশমিক ২৯ শতাংশ বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন। তার মতে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও ভ্যাকসিন গ্রহণ করায় শতভাগের ওপরে লক্ষ্যমাত্রা চলে গেছে আর এই কার্য সম্পাদন সবই সিটি করপোরেশনের বিশেষ উদ্যোগের কারণে সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের একমাত্র বরিশাল জেলার মধ্যেই সিটি করপোরেশন শিক্ষার্থীদের আলাদা ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।তাদের জন্য পানি ও খাবারের ব্যবস্থা করেছে। তারা এমনভাবে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়েছে, যাতে কোনো ধরনের বিরক্তি ও অস্বস্তি ছাড়া শিক্ষার্থীরা সঠিক নিয়মানুযায়ী ভ্যাকসিন নিতে পারে। এছারা উক্ত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক স্বাস্থ্য ডাঃ মোঃ হুমায়ুন শাহীন খান, শের-ই-বাংলা-মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মনিরুজ্জামান শাহিন, শের-ই-বাংলা-মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম, সরকারী ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া, বরিশাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্বাস উদ্দিন, হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন ফারুক, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের অধ্যাপক সভাপতি নজমুল হোসেন আকাশ, সরকারি জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাবা মাহাবুবা হোসেন, জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট সাংবাদিকগন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।