ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে কৃষকের ঘুম হারাম ধান খেতে ব্লাস্ট-রোগ


ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে কৃষকের এখন ঘুম হারাম ধান খেতে ব্লাষ্ট-রোগ। এই উপজেলায় ধান কাটার আগ মুহূর্তে কৃষকদের রোপনকৃত ফসলি জমিতে ছত্রাকজাতীয় ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ছে । ২৬ ও ২৮ ব্রি ধানে এ রোগে সংক্রমণের সংখ্যা বেশী। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এ ধান আবাদ করা কৃষকরা। তবে এ রোগের সংক্রমণ রোধে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি অফিস। ইতিমধ্যেই কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তার ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্লাস্ট রোগে ধানের শীষের নিচে কালো দাগ দেখা দেয় ও শীষ দ্রুত মরে যায়।
চলতি মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ও একটি পৌরসভায় মোট ২২ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ২৬ ও ২৮ জাতের ব্রি ধান চাষ করেছেন কৃষকেরা। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার কথা। কিন্তু উপজেলার আমতৈল, ধারা, কৈচাপুর, স্বদেশীসহ পৌরসভার প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে দেখা দিয়েছে এ রোগ। তবে বাস্তবে এর সংখ্যা বেশী রয়েছে বলছেন কৃষকরা। সরেজমিনে দেখা যায়, ধানখেত জুড়ে ব্লাস্ট রোগের ওষুধ ছিটিয়ে দিচ্ছেন কৃষকেরা। পাকা ধানের শীষের নিচে কালো দাগ।
ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষক জানান, প্রথমে আক্রান্ত ধান খেতে কয়েকটি ধানের শীষের নিচে কালো দাগ দেখা যায়। এরপর দ্রুত সারা খেতে তা ছড়িয়ে পড়ে। অল্প সময়ের মধ্যেই ধানের শীষ মরে যায়। ধারা ইউনিয়নের কয়রাহাটি গ্রামের কৃষক আয়নাল হক বলেন, আমার জমিতে প্রায় দেড় একর জমিতে ২৮ ব্রি আবার করেছিলাম। ফলনো এবার ভালো হয়েছে। প্রতি একরে ৭০ থেকে ৮০ মণ ধান পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু হঠাৎ এই রোগ দেখা দেওয়ায় সব আশা শেষ। তারপরও কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে আমি কীটনাশক স্প্রে করছি। আমরা বর্তমানে আতঙ্কে রয়েছি।
আমাদের বাকি ফসলগুলো যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আমাদের খাবার সংকট দেখা দিবে। আরেক কৃষক ফজলুল হক বলেন, যারা দেশি জাতের ২৬ ও ২৮ ব্রি ধান চাষ করেছেন, তাদের সবার খেতেই ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। অনেক খেতের ধান ইতিমধ্যে মরে গেছে। অনেক কৃষক এক মুঠো ধানও ঘরে তুলতে পারবেন না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান এই প্রতিনিধিকে বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগের আক্রমণ দমনের জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠে কাজ করছেন। আমরা ইতিমধ্যেই সবার ছুটি বাতিল করেছি। কৃষকদের ফসলি জমিতে ছত্রাকনাশক ঔষধ নাটিভো স্প্রে করার পরামর্শ ও তা বাস্তবায়নের আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। দিনে অতিরিক্ত গরম ও শেষ রাতে ঠাণ্ডা আবহাওয়ার তারতম্যেও ফলে এ রোগ দেখা দেয়।