মোল্লাহাটে সরকারি কর্মচারীকে গলা কেটে হত্যা, হতবাক এলাকাবাসী
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে সমাজসেবা কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, বীর-মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নাঈম খা (২৫)’কে উপর্যুপরি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে দুস্কৃতিকারীরা। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার গাংনী গ্রামে নিজ বাড়ির অদুরে সোহরাব হোসেন হিরন ওরফে হিরন মাস্টারের জনশুণ্য বাড়ির উঠানে বর্বরোচিত এ হত্যার ঘটনা ঘটে। গাংনী গ্রামের বীর-মুক্তিযোদ্দা আবুল খার তিন সন্তানের মাঝে এক মাত্র পুত্র নাঈম খা। এ ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক (ওই রাতেই) মোল্লাহাট থানা অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাস ও এএসপি (সার্কেল) ছয়রুদ্দিন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। একই সাথে ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং দুস্কৃতিকারীদের ধরার জোর ততপরতা শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় কালন মোল্লা (৩৫) জানান, তিনিসহ চার জন লিটন শেখ (২২), বিপ্লান মৃধা (২২) ও ভিকটিম নাঈম খা (২৫) হিরন মার্কেটের একটি ঘরে লুডু খেলছিলেন, তখন লুডুর ছক্কা নিয়ে যায় জনৈক আবুল শেখের ছেলে মাতিন শেখ (২৮)। যে, কারণে তাদের খেলা বন্ধ ছিলো। এমতাবস্থায় নাঈমের মোবাইলে ভিডিও কল আসে, যার কন্ঠ শুনেছি নারীর। ঘরের মধ্যে কথা ভালো বুঝতে না পারায় কথা বলতে বলতে বাহিরে যায় নাঈম। এর মাত্র ৫-১০ মিনিট পর চেচা-মেচির মাধ্যমে শুনি এ মার্কেটের মালিক হিরণের বাড়ির উঠানে নাঈম পড়ে আছে। মার্কেট সংলগ্ন ওই বাড়িতে তখন আমিসহ উপস্থিত অনেকে দৌড়ে যাই এবং দেখি গলা কাটা অবস্থায় নাঈম পড়ে আছে।
এরপর তাকে গাংনী বাজারে এ মার্কেট ও বাড়ির মালিক হিরণের ক্লিনিকে নেয়া হয়। ততক্ষণে সে আর বেচে নাই বলেও জানান তিনি। এরপরও নাঈমকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
মার্কেট ও বাড়ির মালিক হিরনের আতিœয় মৃত শাহাদত মোল্লার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৭০) জানান, এশার নামাজের জন্য অজু করছিলাম, এমতাবস্থায় ভাগ্নে হিরনের উঠানে বাশ পড়ার শব্ধ শুনে দ্রæত যাই, তখন দেখি হিরনের ঘরের ডোয়ার কাছে পড়ে থাকা একজন গুজড়াচ্ছে (গোঙাচ্ছে), আমি কয়েক ডাক দিছি তবু, ডাক না শোনায় পরে চিৎকার করে দেকানের লোকদের বলি। এরপর অনেকে এসে তাকে উদ্ধার করে।
ভিকটিম নাঈমের ভগ্নিপতি আবুল ফকির ও চাচাতো ভাই আজিম খা জানান, পূর্ব শত্রæতার জেরে নাঈমকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেন।
মোল্লাহাট থানা অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাস জানান, এখন পর্যন্ত এ ঘটনার লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় নাই। তবু, প্রকৃত অপরাধীদের খুজে বের করতে পুলিশি ততপরতা চলছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ উসমান হামিদ জানান, নাঈম অত্যন্ত নিরীহ ও সরল স্বভাবের ছিলো। তাকে এভাবে হত্যা করা এটা ভাবতেই কষ্ট হয়।