বাগেরহাটের মোল্লাহাটে প্রধান শিক্ষকদের দেশাত্মবোধের অভাবে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাংলা বর্ষবরণ ও সরকারি নির্দেশনা পালন না হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ৩১ নং কুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৯ নং নতুন ঘোষগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৭ নং ঘোষগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩৭ নং গাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দেশাত্মবোধের অভাবে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করাসহ ও বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান/মঙ্গল শোভাযাত্রা না করার এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে সরেজমিনে গেলে ৩১ নং কুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় ঘেঁষা গৃহকর্তী সখিনা বেগম জানান, সকালে অল্পকিছু সময় বিদ্যালয় খোলা দেখছি, কিন্তু মঙ্গল শোভাযাত্রা বা কোন অনুষ্ঠান হয় নাই।
এবিষয়ে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলরুবা খানম বলেন, আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রা করেছি, তবে অনুষ্ঠানের কোনো ছবি আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ছবি দেখানোর জন্য তিনি তার নিজের এন্ড্রয়েড ফোনে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও দেখাতে ব্যর্থ হন। ২৯ নং নতুন ঘোষগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পরিত্যক্ত খালে/গর্তে মাছ ধরাকালে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ ও মইন সহ অনেকে জানান, তাদের স্কুল তিন দিন বন্ধ দেয়া হয়েছে। তাই আজ স্যাররা আসেন নাই, কোন অনুষ্ঠানও হয়নাই।
উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম বাহাউদ্দিনের ০১৮২৮১৬৩৭৯৯ নং মোবাইলে বারবার চেষ্টা করলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ২৭ নং ঘোষগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামিম জানান, পহেলা বৈশাখের জন্য স্কুল বন্ধ, কোন অনুষ্ঠান হয় নাই। পাশের বাড়ির নাদিম মোল্লা জানান, পহেলা বৈশাখের দিন স্কুলে কোন অনুষ্ঠান হয় নাই এবং কেউ আসে নাই। উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক টুকু মিয়া ভূঁইয়া জানান, তিনি বিদ্যালয়ে যাননি, তবে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
৩৭ নং গাওলা (ফকির বাড়ি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কয়েক শিক্ষার্থী জানান, তাদের স্কুল বন্ধ ছিল, তাই স্কুলে যায় নাই, তারা ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়ে ফিরছেন বলেও জানান। এবিষয়ে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন খাতুন জানান, তার প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়েছে, তিনি অসুস্থ থাকায় তার মোবাইলে ছবি নাই, তবে অসুস্থ থাকলেও বাড়িতে বসে প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন জানান, যথাযথভাবে সকল প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানের জন্য সরকার নির্ধারিত চিঠি দেয়া হয়েছে, যদি কেউ অন্যথা করে তাহলে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধান কে এর দায় নিতে হবে।