মুকসুদপুরে কর্মজীবী এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে মিমাংসার চেষ্টা


গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর সরকারি কলেজে মাস্টার রোলে কর্মরত এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মুকসুদপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই নারী। ভুক্তভোগীর দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, তার স্বামী- নূর ইসলাম শেখ। সাং- রামচন্দ্রপুর, পিং- মোঃ ওয়াদুদ লস্কর। গ্রাম- কলিয়া। আমার স্বামী নূর ইসলাম শেখ ফরিদপুর জেলার বাখুন্ডা জুট মিলে চাকুরি করেন। মুকসুদপুর সরকারি কলেজে আয়ার চাকুরির সুবাদে আমি আমার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে মুকসুদপুর পৌরসভার নগর সুন্দরদী গ্রামের মোঃ শামসুল হক ঠাকুরের ছেলে মনিরুজ্জামান ঠাকুরের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে টিনের ঘরে বসবাস করি।
বিবাদী ইকবাল হোসেন রুমি মুন্সি (৪৫), পিতা- মৃত- জলিল মুন্সি, সাং- মুকসুদপুর পৌরসভাধীন গোপীনাথপুর মুকসুদপুর কলেজ সংলগ্ন দ্বিতীয় তলা নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। সে আমাকে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে কু-প্রস্তাব দেয়। আমার সহিত মেলামেশা করতে চায়। প্রায় রাতে সে আমার ঘরের দরজায় এসে দরজা খুলতে বলে, আমি তার কথায় দরজা খুলি না বিধায় আমাকে সে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বিবাদী ইকবাল হোসেন রুমি মুন্সির দ্বিতীয় তলা বাড়ি ও আমার বাসা পাশাপাশি হওয়ার সুবাদে সে তার বিল্ডিং থেকে সরাসরি আমার গায়ের ওপর ময়লা-আবর্জনা ফেলে ও আমার ওপর মানসিক অত্যাচার করেন। গত ৩১ জুলাই দিবাগত রাত অনুমান ১১ টার সময়ে আমি আমার ১০ বৎসরের শিশু পুত্রকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লে বিবাদী ইকবাল হোসেন রুমি মুন্সি আমার ঘরের দরজায় এসে দরজা খুলতে বলে, আমি তার কথা মত দরজা খুলি না বলে সে আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি সহ হুমকি দিয়ে বলে যে, তুই কি ভাবে এই ঘরে থাকিস আমি তা দেখে নেবো।
বিবাদী ইকবাল ওরফে রুমি মুন্সি বর্তমান মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ রবিউল আলম শিকদারের আপন শ্যালক ও প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় তার ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। পরে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য লেঃ কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খানের নির্দেশে মুকসুদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কাউসার আহমেদ ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রথম সদস্য হলেন অভিযুক্ত রুমি মুন্সির আপন ভাগ্নি জামাই পৌরসভাধীন টেংরাখোলা গ্রামের রওশন মিয়ার ছেলে কলেজের শিক্ষক মাহাবুব হাসান সাগর, কলেজের শিক্ষক কবির আহমেদ, কলেজের লাইব্রেরীয়ান মোঃ লাভলু মিয়া।
এদিকে অসহায় নারী জাহেদাকে ন্যায় বিচার পেতে সহায়তা করার দরুন বিবাদীর পক্ষ থেকে বাড়ির মালিকের শশুর প্রবীণ ব্যক্তি কাজী আতিয়ার রহমান (৭০) কে তার নিজ বাড়িতে গিয়ে ও ফোনে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান অব্যাহত রেখেছেন প্রভাবশালী বিবাদী পক্ষ। পরে তিনিও নিরুপায় হয়ে গত ৫ আগস্ট মুকসুদপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এমতাবস্থায় বাদী জাহেদা বেগম আদৌ কি ন্যায় বিচার পাবেন? সে ব্যাপারে এলাকায় চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এ বিষয়ে মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও মুকসুদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি পৌর মেয়র আলহাজ্ব এড.আতিকুর রহমান মিয়া বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর, আমার নিকট ন্যায়বিচার চেয়ে জাহেদা বেগম ও পরে আতিয়ার রহমান এসেছিলো, মাননীয় এমপি মহোদয়ও এ বিষয়ে অবহিত রয়েছেন, সুষ্ঠ সমাধান হোক, ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাক এটাই আমাদের কাম্য। মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবু বকর মিয়া বলেন, থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে। এএসআই হাসান বিষয়টি তদন্ত করছে।