মানুষের জন্য কাজ করতে অদৈম্য ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট

‘মানুষ মানুষের জন্য’- এ উক্তিটি বেশির ভাগ সময়ই মনে করিয়ে দেয় আমাদের ক্লান্তিলগ্নে। বরাবরের মতোই আমাদের আবারো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে মহামারী করোনার এই অন্ধকার সময়ে। ইতিমধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়েছে দেশের অধিকাংশ মানুষ। এখন তারা একমুঠো ভাতের জন্য মানুষের দাড়ে দাড়ে ঘুড়ছে।

অন্যদিকে এই অদৃশ্য শত্রুর ছবলে আক্রান্ত হলে ভয়ে নিজের পিতা-মাতাকে ফেলে যাচ্ছে নিজের সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনেরা। অদৃশ্য শত্রুর ছবলে আক্রান্ত সেই করোনা রোগীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে গোপালগঞ্জ বন্ধুমহল ও চন্দ্রদিঘলিয়া ব্লাডব্যাংক। সংগঠনগুলো খুব অল্প সময়ে পৌঁছে গেছে দুয়ারে দুয়ারে ফ্রি অক্সিজেন সেবা নিয়ে। শুধু অক্সিজেন সেবাতেই সীমাবন্ধ নয়, তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছে সকল ধরনের মানবিক কর্মকাণ্ড। তাঁদের কাজের বিষয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় চন্দ্রদিঘলিয়া ব্লাড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও গোপালগঞ্জ বন্ধুমহলের স্বেচ্ছাসেবী এম. আজমানুর রহমানের সাথে।

তিনি জানান, আমরা গতবছর করোনা শুরুর প্রথম দিক থেকেই চন্দ্রদিঘলিয়া ব্লাডব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করি। তার মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান, সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানো, করোনায় কর্মহীনদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ বেশ কিছু কাজ করেছি। যে কোনো ছোট জায়গা থেকেই বড় ধরনের কাজ করা যায়, মূলত আমরা সেটাই মানুষকে শেখাতে চেয়েছি এবং সেই লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছি। আজমানুর বলেন, মানুষের জন্য কাজ করাটা শুরু হয়েছিলো অনেক আগে থেকেই তবে এই করোনা পরিস্থিতি আমাদের আরো আগ্রহ জাগিয়েছে। আমাদের এই ছোট্ট সংগঠন নিয়ে ফান্ড ছাড়া কিভাবে কাজ করবো সেটা নিয়ে সগঠনের সকলেই চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই কিছু মানুবিক মানুষের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় যাত্রা শুরু করলো “গোপালগঞ্জ বন্ধুমহল”।

আমাদের ছোট্ট সংগঠনটি নিয়ে যুক্ত হলাম ‘গোপালগঞ্জ বন্ধুমহল’-এর সাথে। শুরু হলো দিন-রাত ২৪ ঘন্টা করোনা আক্রান্ত রোগীদের ফ্রি আক্সিজেন সেবা দেওয়া। আমাদের এই রাস্তাটা এতটা সহজ ছিলো না। মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছাশক্তি থেকেই এই কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, যেহেতু করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। তাই এখানে ভলেন্টিয়ারের সংখ্যা খুবই কম৷ ফলে আমরা যারা আছি, তাদের দিনের পর দিন, রাতের পর রাত কাজ করতে হচ্ছে। আমরা আসলে এটাকে ধরে রাখতে চাই৷ সংগঠন কত বড় হলো সেটা বিবেচ্য নয়৷ অনুপ্রেরণাই বড় কথা৷

একদিন আল্লাহর রহমতে করোকালীন স্বেচ্ছাসেবীরা করোনা জয় করবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এসব সংগঠন এবং সংগঠনের সকল স্বেচ্ছাসেবীরা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। যাতে করে প্রতিটি মানুষই নিজেদের ইচ্ছাশক্তি থেকেই মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে এমনটাই প্রত্যাশার কথা জানান এই তরুণ স্বেচ্ছাসেবী।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *