মানুষের জন্য কল্যাণকর কাজের আত্মতৃপ্তি কাছে পৃথিবীর অন্য সবকিছু নগন্য”

টুঙ্গিপাড়া থানার সাফল্যের বর্ণান দিতে গিয়ে এমন কথাই বললেন টুঙ্গিপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব নয়ন চন্দ্র দেবনাথ। তিনি জানান যে, গত ২১/০২/২০২৫ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা দিকে পাটগাতি কাজী বাড়ির কাজী নাসির উদ্দিন, কাজী হীরা খানম এবং কাজী শফিকুল আলাম বাবু নামের তিনজন ব্যক্তি থানায় এসে জানান, তাদের তিনজনের তিন ছেলে যথাক্রমে কাজী মুহিত (১০), কাজী শাওন মাহমুদ লিখন (১৩) এবং কাজী মেহেদী হাসান বাবু (১৪) নামের তিনজন ছেলেকে সকাল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা তিনজন প্রতিবেশী।

নিখোঁজ তিনজন ছেলের অভিভাবকগণ নিশ্চিত নন যে, তারা একসাথে আছে কিনা। তবে এদের মধ্যে কাজী মেহেদী হাসান বাবু (১৪) কাছে একটি মোবাইল আছে। মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জানাব নয়ন চন্দ্র দেবনাথ অভিযান শুরু করনে বলে জানান।

তিনি জানান যে, গোপালগঞ্জ জেলায় সদ্য যোগদানকৃত অতিঃ পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেন স্যারের দিক নির্দেশনায় এবং সহায়তায় মোবাইলের তথ্য থেকে জানতে পারেন নিখোঁজ তিনজন ছেলে শরীয়তপুরের নড়িয়া চৌরাস্তার একটি হোটেলে কাজ করার জন্য যায়।

তিনি হোটেল মালিকের সাথে কথা বলে জানতে পারেন যে, হোটেল মালিক তার হোটেলের থালা বাসন ধুয়ার জন্য বয় চেয়ে গত ৩/৪ দিন আগে ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। এই বিজ্ঞাপন দেখে তারা তিনজন নড়িয়ার ঐ হোটেলে বয়ের কাজ করতে যায়।

সাথে করে তাদের জন্ম নিবন্ধনের মূলকপিও নিয়ে যায়। হোটেল মালিক ছেলে ০৩ জনের পোষাক দেখে বুঝতে পারে তারা ভাল ফ্যামিলির ছেলে। তাই সে তাদের কাছে পরিবারের মোবাইল নাম্বার চায় কিন্তু তারা নাম্বার না দিয়ে জন্ম নিবন্ধনের মূলকপি হোটেল মালিকের কাছে রেখে পালিয়ে যায়।

এরপর জনাব নয়ন চন্দ্র দেবনাথ নড়িয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে এবং হোটেল মালিকের সহায়তায় তাদের তিনজনকে নড়িয়া চৌরাস্তা এলাকা হতে উদ্ধার করে টুঙ্গিপাড়া থানায় এনে তাদের তিনজনকে তিনজনের অভিভাবকের নিকট বুঝিয়ে দেন। তিনজনকে থানায় আনার পর তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, তিনজনেরই বাবা-মা তাদের সাথে কারণে অকারণে রাগারাগি এবং বকাবকি করে।

আবার মারধরও করে। তাই তারা তিনজনে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে হোটেলে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। টুঙ্গিপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জানান যে, তিনজনের পরিবারের সবাই তাদেরকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেয়ে অনেক খুশি। আর তিনি তাদেরকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে মানসিকভাবে অনেক শান্তি অনুভব করছেন। তিনি সকল অভিভাবকদের আরো অনুরোধ করেন ,“ঘরের ছোটদেরকে এমনভাবে শাসন করবেন না, যাতে করে তারা ঘর ছেড়ে যাওয়ার মত সিদ্ধান্ত নেয়। ”



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *