বাহুবলে জমিসংক্রান্ত সংঘর্ষে যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের মৃত্যু
সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার কামারগাঁও গ্রামে জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১০ জন। তাদেরকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ও হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়,জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে কামারগাঁও গ্রামের আব্রু মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া ও তার লোকজনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের চেরাগ মহালদারের ছেলে ইউসুফ গংদের বিরোধ চলে আসছিল।
জমির সীমানা নিয়ে মাস খানেক আগে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ইউসুফ মিয়া ও তার ভাই লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে ফারুক মিয়ার পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় গত ২১ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে তারা জামিন লাভ করেন। এরপর থেকে উভয়পক্ষে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। দুই দিন আগেও তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাহুবল উপজেলার চেরাগ আলী ফিলিং স্টেশন এলাকায় পুনরায় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে বিষয়টির জের ধরে রাত ১০টায় ইউসুফ মিয়া ও উস্তার মিয়াসহ তাদের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে আহত ইউসুফ মিয়া,উস্তার মিয়া,আতাউর মিয়া,সোলেয়মান আহমেদ,হাছন আলী,শহীদ মিয়া ও কালা মকসুদসহ ১০ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইউসুফ মিয়া ও উস্তার মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানেও দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারামারি হয়। পরে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম মুরাদ আলিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে যান ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নিহতরা হলেন;- ওই গ্রামের চেরাগ মহালদারের ছেলে বাহুবল উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ মিয়া (৪০) ও হাছন আলীর ছেলে উস্তার মিয়া (৪২)। এদিকে,সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুনরায় রাত ১২টার দিকে উভয় পক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
একই দিন দিবাগত রাত ০১:০০ ঘটিকার সময় হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি ও জনাব মোঃ শামসুল হক,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস),হবিগঞ্জ সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় জনাব মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ গাজী,মাননীয় সংসদ সদস্য, হবিগঞ্জ-১ মহোদয় উপস্থিত ছিলেন।
মাননীয় সংসদ সদস্য ও পুলিশ সুপার মহোদয় এলাকার লোকজন ও ভিকটিমদ্বয়ের আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলেন এবং উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। পরিদর্শনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন জনাব আবুল খয়ের,সহকারী পুলিশ সুপার,বাহুবল সার্কেল,হবিগঞ্জ ও অফিসার ইনচার্জ, বাহুবল মডেল থানা,হবিগঞ্জ সহ এলাকার গণ্যমান্য লোকজন।