বরিশালে জুয়া খেলার আসর থেকে ০৯ জুয়ারী আটক।।
বরিশালে সংবাদ প্রকাশের পর নগরীর রুপাতলী এলাকায় ওয়ানটেন জুয়া খেলার আসর থেকে ০৯ জুয়ারীকে আটক করেছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। এ সময় ওয়ানটেনের বোর্ডসহ বেশ কিছু জুয়া খেলার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
রোববার দিবাগত রাত সোয়া ২ টার দিকে নগরীর রুপাতলীর তুরাগ পেট্রোল পাম্পের পিছনে বাচ্চু মুন্সির ভাড়াটিয়া বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়। আজ সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন।
আটককৃতরা হলেন- উজিরপুরের মন্ডপাশা এলাকার মৃত আবুল কালাম আজাদের ছেলে মীর কামরুজ্জামান (৪৫), ভূরঘাটার খাঞ্জাপুরের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ সবুজ হাওলাদার (৩০), ঝালকাঠির কলেজ মোড় এলাকার মোঃ সালাউদ্দিনের ছেলে মোঃ রাজু (৪৫), ঝালকাঠির শহীদ সরনী সড়কের অহেদ শিকদারের ছেলে মোঃ মিরাজুল ইসলাম (৪২), নগরীর সিএন্ডবি রোডস্থ ইসলাম পাড়া এলাকার সেরজন আলী হাওলাদারের ছেলে মোঃ মিন্টু (৪০), নথুল্লাবাদ এলাকার মৃত মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৮), রুপাতলীর বসুন্ধরা হাউজিং এলাকার মৃত হোসেন মুন্সির ছেলে মোঃ বাচ্চু মুন্সি (৪৮), রুপাতলীর বাইতুল আমান সড়কের মৃত আবদুর রাজ্জাক মুন্সির ছেলে সাইফুদ্দিন (৫০), রুইয়ার পোল এলাকার আনসার শেখের ছেলে রিপন শেখ (৪০)।
পুলিশ জানায়- রোববার দিবাগত রাত সোয়া ২ টার দিকে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে নগরীর রুপাতলীর তুরাগ পেট্রোল পাম্পের পিছনে বাচ্চু মুন্সির বাসায় অভিযান চালায় কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের এসআই মোঃ সেলিম সরদার, এএসআই আল মামুন জুয়েলসহ সঙ্গীয় ফোর্স। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়ারী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কোতয়ালী মডেল থানার চৌকশ পুলিশ অফিসাররা ওয়ানটেন খেলার আসর থেকে তাদের আটক করেন। পরে আটককৃদের ও ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে সাড়ে ৫ হাজার টাকা, একটি নাম্বারিং করা রেকসিনের বোর্ড, ওয়ান থ্রি নাম্বারিং করা একটি কাঠের বোর্ড, ৫টি কাটার পিন, কয়েকটি মোমবাতি ও গোলাপ জল জব্দ করা হয়। জুয়ারীদের আটকের সংবাদ পেয়ে অধশতাধিক সংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে কয়েকজন জুয়ারী সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন। পরে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।
ওয়ানটেন নামক জুয়া খেলা খেলতে এসব জুয়ারিরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে অংশগ্রহণ করতো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকৃতরা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বলেও জানায় পুলিশ।
আটককৃদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের এসআই মোঃ সেলিম সরদার বাদী হয়ে ১৯৬৭ সালের জুয়া আইনের ৪ ধারায় মামলা করেছেন। পাশাপাশি বাসার মালিক বাচ্চু মুন্সিকে ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনের ৩ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়- কামরুজ্জামান-রফিকের নেতৃত্বে ওয়ানটেন জুয়ার বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করছিল। কামরুজ্জামান-রফিক গ্রুপটি সংখ্যাগত দিক থেকে বেশ শক্তিশালী। এদের সাথে সবুজ যুক্ত হয়ে বড় ধরনের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিল। এরা কখনো কলেজ এভিনিউ, ইসলাম পাড়া, সাগরদী অথবা কাজীপারায় জুয়ার আসর পালাক্রমে বসাতো। এ ক্ষেত্রে বরিশাল শহর ছাড়াও খেলোয়াড় সংগ্রহে বরগুনা শহর ও আমতলী উপজেলা এবং পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জসহ মাদারীপুরের টেকের হাটে প্রাইভেটকার পাঠিয়ে তাদের আনা-নেয়ার ব্যবস্থা করতো। আসা মাত্র জনপ্রতি এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট এবং সেই সাথে হরিজন কলনিতে বিক্রি দর্শনার কেরু কোম্পানীর তৈরী বাংলা মদ সরবরাহ করে ওয়ানটেন বোর্ডে হাজার টাকা বিছিয়ে দিতে বেসামাল করে তুলতো।
এদিকে আটকের পর থেকে তাদের মদদদাতাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। রাতে জুয়ারীদের আটকের পর থেকে নানা কৌশলে তাদের ছাড়িয়ে নিতে পায়তারা চালান। কিন্তু কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ায় সুবিধা করতে পারেনি তারা।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন- রুপাতলী থেকে ৯ জুয়ারীকে আটক করা হয়েছে। তাদের আজ সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বরিশাল শহরে কোন অন্যায় কাজ প্রশ্রয় দেয়া হবে না।