প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস জয় করলেন গ্রামিন ব্যাংকের পাটগাতী শাখার ম্যানেজার মোঃ আঃ মান্নান
টুঙ্গিপাড়া প্রতিনিধিঃ টুঙ্গিপাড়ায় প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস জয় করলেন মোঃ আঃ মান্নান করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশেও দ্রুতগতিতে বাড়ছে মৃত্যু ও সংক্রমণ। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। প্রিয়জনকে হারানোর কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে আকাশ-বাতাস। আবার করোনা ভাইরাসের এই মহামারী থেকে প্রতিনিয়ত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে হাজারো মানুষ। আত্মবিশ্বাস, সচেতনতা,পারস্পারিক সহযোগিতায় করোনা জয় করছেন অনেকেই। তেমনই একজন গ্রামীণ ব্যাংক r পাটগাতী টুঙ্গিপাড়া শাখার ম্যানেজার মোঃ আঃ মান্নান। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অফিস নির্দেশক্রমে পরিবারের সকলেই খুলনা চলে যায়। এর মাঝেই অফিসের সকলে করোনা পরীক্ষা করা হয়। তবে আজ বুধবার পুনরায় তার করোনা পরীক্ষার পর ফলাফল নেগেটিভ আসে। নিজের করোনা জয়ের গল্প দৈনিক শতবর্ষকে জানিয়েছেন ম্যানেজার মোঃ আঃ মান্নান। তিনি বলেন, সন্দেহের যের ধরে আমি নমুনা দেই। দিনটি ছিল ২৭ জুন। যদিও আমার কোনো ধরনের লক্ষণ ছিল না।
পরে ৩০ জুন রাতে করোনা পরীক্ষার ফল পাই এবং জানতে পারি আমি করোনায় আক্রান্ত। কোভিড-১৯ টেস্টের রেজাল্ট আসে আনুমানিক সন্ধ্যার সাতটার দিকে। আতঙ্কে মনে হচ্ছিল এই বোধহয় শেষ! দু:শ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটতে থাকে। পরিবারের অন্য সদস্যদের জানানোর পর তারা স্তব্ধ হয়ে গেলেন। নিজের আত্মবিশ্বাসের বর্ণনা দিয়ে ম্যানেজার আঃ মান্নান বলেন, ‘এরপরই পণ করলাম, ভয়কে জয় করতে হবে। মনকে শক্ত করলাম। যোগাযোগ করলাম চিকিৎসকের সাথে। যেহেতু আমার কোনো লক্ষণ ছিল না, তাই আমাকে তিনি কোনো ওষুধ দেননি। শুধুমাত্র ভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলে দেন কীভাবে গরম পানি ব্যবহারে সুস্থ হয়ে উঠতে পারি আমি।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ‘বি’ ও ‘ডি’ ক্যাপসুল এবং সিভিডসহ ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার খেতে থাকি। তার নেয়া বিভিন্ন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে অনিক বলেন, ‘মাল্টা ও আপেল খাই প্রতিদিন দুই বেলা। বেশি করে আদা-লবঙ্গ দিয়ে চা বানিয়ে দিনে ৩-৪ বার খেয়েছি। আদা, দারচিনি, এলাচ, রসুন, লবঙ্গ দিয়ে পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে গরম ভাপ নিতাম দিনে দুবার (সর্বোচ্চ ১০ মিনিট করে) এবং চায়ের মতো খেতাম দুই বেলা। দিনে একবার কালোজিরা এবং মধু মিশিয়ে খেতাম। গলা ভেজা রাখতে খেতাম লবন মাখানো আদা। গোসলও করতাম হালকা গরম পানি দিয়ে।’ ‘এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেইনি। প্রতিদিন ঘর জীবাণুমুক্ত করতাম স্প্রে দিয়ে। আর মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য আমি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি বিভিন্নভাবে।’ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, সকাল থেকেই দিনভর গলা ভেজা রাখতাম।
এক কথায় নিজের সাহস ধরে রাখতে ভুলে যেতাম যে আমি করোনায় আক্রান্ত একজন রোগী। এটা ঠিক যে কখনোই কোনো শারীরিক সমস্যা হয়নি আমার, তাই স্বাভাবিক থাকতে পেরেছি সহজে, বলেন তিনি। ম্যানেজার আঃ মান্নান বলেন করোনা আক্রান্ত হলে ভয়ের কিছু নেই। কারণ ভীত হয়ে পড়লে ক্ষতি হবে আরও বেশি। তাই সতর্ক এবং সাহসী হতে হবে। তাহলেই মিলবে সুস্থতা। ‘যেমনটা এই মুহূর্তে আমি অনুভব করছি। আর ঠিক ১৫ দিন পর পরীক্ষা টেস্ট করিয়েই আমার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। মুঠোফোনে দৈনিক শতবর্ষকে ম্যানেজার আঃ মান্নান বলেন সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য যে, আমি সুস্থ হয়েছি। এরপর তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জানান টুঙ্গিপাড়াবাসী সহ তার সকল শুভাকাঙ্খী দের। তিনি বলেন সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত এবং টুঙ্গিপাড়াবাসীর অন্তঃস্থলের দোয়া এবং তাদের অপার ভালবাসায় আমি আজ সুস্থ। সত্যিই আমি আজ কৃতজ্ঞ টুঙ্গিপাড়াবাসীর কাছে। সবশেষে, আতঙ্কিত না হয়ে সকল করোনা রোগীকে সাহসের সাথে ‘করোনা’ জয়ের আহ্বান জানান তিনি।