প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ ও চেক আত্মসাতের অভিযোগ ইউএনও তলব করেছেন গণমিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালককে

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম এনজিও গণমিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বিশ্বাসকে শুনানীর জন্য তলব করেছেন। প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থ ও চেক ফেরত পাওয়ার জন্য এক বিধবা নারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুনানীর ওই লিখিত নোটিশ জারি করেন। রবিবার (১০ জানুয়ারী) বিকালে সাংবাদিকদের কাছে নোটিশ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন বিধবা রোজিনা সিদ্দিক। তিনি চিতলমারী সদর বাজারের মৃত সিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রী। আগামী ১৩ জানুয়ারী এ শুনানী হবে। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে রোজিনা সিদ্দিকের এই বঞ্চনা’র কথা প্রকাশের পর বিষয়টি বহুল আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

রোজিনা সিদ্দিক কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী যখন মারা যান তখন আমার নাবালক দু’টি বাচ্চা। অনেক কষ্টে ধারদেনা করে গণমলিন ফাউন্ডেশনের টাকা পরিশোধ করেছি। ওই টাকা ছিল আমার কলিজা নিংড়ানো টাকা। তাই আমি সুবিচারের আশায় গত ২৩ ডিসেম্বর ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আজ (১০ জানুয়ারী) সেই অভিযোগের শুনানীর নোটিশ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বহু অসহায় মানুষের সাথে এই ধরণের অনিয়ম ও দূর্নীতি ওই গণমিলন ফাউন্ডেশন করেছে। যা উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করলে ‘থলের বিড়াল’ বেরিয়ে আসবে।
গণমিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ইউএনও অফিসের নোটিশ পেয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মারুফুল আলম বলেন, গণমিলন ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চেক আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই পক্ষকে নোর্টিশের মাধ্যমে ডেকেছি। আগামী ১৩ জানুয়ারী সকাল ১০ টায় বিষয়টির শুনানী হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে করা রোজিনা সিদ্দিকের অভিযোগ পত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর তার স্বামী সিদ্দিকুর রহমান সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান। এর ২ মাস আগে তিনি গণমিলন ফাউন্ডেশন চিতলমারী শাখা থেকে শতকরা ১৫% লাভে ৩ লাখ টাকা ঋণ গ্রহন করেন। এ সময় গনমিলন ফাউন্ডেশন বীমা বাবদ ৩ হাজার টাকা জমা নেয়। বীমা নেয়ার মানে হল কোন ঋণ গ্রহীতা মারা গেলে তার পরিবারের আর ওই লোনের টাকা পরিশোধ করা লাগে না। ঋণের দুই কিস্তি ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তার স্বামী মারা যান।

স্বামীর মৃত্যুর পর গণমিলন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বিশ্বাস প্রতারনার মাধ্যমে রোজিনা সিদ্দিকের কাছ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ওই টাকার সুদও বুঝে নেন। সে সময় তিনি বীমা সর্ম্পকে কিছুই জানতেন না। বছর খানেক আগে তিনি উক্ত গণমিলন ফাউন্ডেশন থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহন করেন। তখন রনজিৎ কুমার বিশ্বাস তার কাছ থেকে বীমা বাবদ ১০ হাজার টাকা জমা নেয়। সেই সময় তিনি স্বামীর বীমার বিষয়ে জানতে পারেন যে গণমিলন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা তার সাথে প্রতারণার মাধ্যমে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ওই টাকার সুদও বুঝে নিয়েছে। সেই সাথে তার স্বামীর দেয়া একটি ব্লাংক চেক অদ্যবধি প্রতিষ্ঠানটি ফেরত দেয় নাই। বিষয়টি তাদের তিনি একাধিকবার বললেও তারা কর্ণপাত করেননি।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

preload imagepreload image