পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে মারধোর করে ৪০ দিনের কর্মসূচির টাকা নিয়ে গেল ইউপি সদস্য


পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের পশ্চিম চরণী পত্তাশী গ্রামে এক শ্রমিকের ৪০ দিনের কর্মসূচির টাকা মারধোর করে ছিনিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত বাবুল খান পত্তাশী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য।
৪০ দিনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া পশ্চিম চরণী পত্তাশী গ্রামের ওমর হাওলাদার নামে এক শ্রমিককে মারধোরের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য বাবুলের বিরুদ্ধে। ওমরের মা আনোয়ারা বেগম জানান, তার ছেলে ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ শেষ করার পর তার মোবাইল নম্বরের একাউন্টে ৮,০০০ টাকা জমা হয়। স্থানীয় বিভিন্ন দোকানের পাওনাদাররা চাপ দেওয়ার পর সে সেখান থেকে ৪,০০০ টাকা তুলে তাদের দেনা পরিশোধ করেন।
পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর স্থানীয় পশ্চিম চরণ পত্তাশী রহিম উদ্দিন স্মৃতি দাখিল মাদ্রাসার সামনের দোকানে এসে ওমরকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় বাবুল। এরপর ওমরের মোবাইলে ৪,০০০ টাকা দেখে ক্ষিপ্ত হয় সে। এরপর এক পর্যায়ে ওমরকে চর থাপ্পর দিয়ে মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেয় ইউপি সদস্য বাবুল। পরবর্তীতে সেখান থেকে টাকা তুলে মোবাইলটি ফেরত দেয় সে।
তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য বাবুল।
এ বিষয়ে পত্তাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শাহীন হাওলাদার জানান, ৪০ দিনের কর্মসূচির টাকা নিয়ে বাবুলের সাথে কোন ঝামেলা হয়নি। ওমর ও বাবুলের মধ্যে পূর্বের বিরোধের জের ধরে একটু সমস্যা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে তা মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
তবে একজন শ্রমিকের সাথে ইউপি সদস্যের কি বিরোধ থাকতে পারে এ বিষয়ে মোবাইলে কথা বলতে অস্বীকার করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সরবরাহ করা নামের তালিকা ও মোবাইল নম্বরে নির্ধারিত টাকা পাঠানো হয়েছে বলে জানান ইন্দুরকানী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম।
এরপরও কেউ শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গেলে সেটা দুখঃজনক বলে মন্তব্য করেন শফিকুল।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ লুৎফুন্নেছা খানম জানান, ৪০ দিনের কর্মসূচিতে স্বচ্ছতার জন্য সরকার মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে শ্রমিকদের একাউন্টে টাকা পৌছে দিয়েছে সরকার। এখানে জনপ্রতিনিধিদের টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নাই।
তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ রাস্তাঘাট সংস্কার ও পুনঃনির্মানের জন্য ৪০ দিনের বিশেষ কর্মসূচির হাতে নেয় সরকার। এর মাধ্যমে শ্রমিকদের প্রত্যেককে দৈনিক ৪০০ টাকা হারে দুই কিস্তিতে মোট ১৬,০০০ টাকা প্রদান করা হয়।