নড়াইলে সময়ের পরিবর্তনে মৃৎ শিল্পের কারিগররা পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে!!

কারিগররা

নড়াইলে সময়ের পরিবর্তনে মৃৎ শিল্পের কারিগররা পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। মৃৎ শিল্প বাঙালী সংস্কৃতির একটি বড় অংশ। এঁটেল মাটি দিয়ে এক সময় মাটির হাড়ি, পাতিল, সাড়া, কাঁসা ও প্রভৃতি বাসন তৈরি করা হতো। আর এসব মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কদরও ছিল বেশ ভালো। এক সময় বাংলার ঘরে ঘরে মাটির থালা, পাতিল, কলস, চারা এবং আরো অনেক বাসনপত্র দেখা গেলেও এখন সেখানে জায়গা করে নিয়েছে প্লাস্টিকের থালা, কলস, বদনা, বাটি থেকে শুরু করে যাবতীয় পণ্য। প্রয়োজনীয় পুঁজির স্বল্পতা, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি এবং এই মাটির বাসনপত্র তৈরির জন্য এঁটেল মাটির ব্যবহার ব্যাপক হারে করা হয়ে থাকে।

আগে এ মাটি নদীর কূল, পুকুর খননকালে বিনা পয়সায় পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে এ মাটি কিনতে হয় বেশি দামে। এছাড়া জ্বালানীসহ আনুসঙ্গিক প্রয়োজনীয় উপকরণাদির দাম বৃদ্ধি ও প্লাস্টিক পণ্যের সহজলভ্যতার কারণে বাংলাদেশে মৃৎ শিল্প আজ বিলুপ্রি পথে। কালের বিবর্তনে মৃৎ শিল্প বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য এখন শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাদুঘরে। এক সময় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রাম বাংলার পল্লীতে মৃৎ শিল্প কারিগররা (কুমার) চাকে বসে এঁটেল মাটি দিয়ে জিনিসপত্র তৈরি করতো। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও মৃৎ শিল্পের কারিগর হিসেবে তারা এ কাজে সামিল হতো।

এরপর নারীরা মাটির হাড়ি-পাতিল তৈরি করে রোদে ভাল করে শুকিয়ে এ মাটির পণ্যগুলো পুড়িয়ে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করেন। পুরুষরা এসব মাটির তৈরি পণ্য হাট-বাজারে এবং গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের ফলে মৃৎ শিল্পের কারিগররা তাদের এ পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে বেকার হয়ে পড়ছেন মৃৎ শিল্পের কারিগররা। অনেক মৃৎ শিল্পের কারিগররা বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এছাড়া মাটির বাসনাদি আর আগের মতো চলেনা। কারণ হচ্ছে, বর্তমানে প্লাস্টিকের পণ্য এখন বাজার দখল করে নিয়েছে। এক সময় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে মাটির তৈরি হাড়ি-পাতিলের ব্যাপক প্রচলন ছিল। এখন এ শিল্প আর আগের মতো চলেনা। দিন দিন কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ায় মৃৎ শিল্পীরা অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যে এ পুরাতন পেশা ধরে রাখতে চেষ্টা করছে। এছাড়া তারা সহজ শর্তে সরকারি-ঋণ সহায়তা দাবী করেন। 



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *