প্রোফাইল ছবিতে মেয়েদের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া আইডির মাধ্যমে ফেসবুক
ফ্রেন্ড করে অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে তরুণীদেরকে ব্ল্যাকমেইল করা প্রতারক তন্ময়
সরকার (১৯)কে গ্রেফতার করেছে নড়াইল পুলিশ।সে মালিয়াট গ্রামের নরত্তম সরকারের
ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ
ওবাইদুর রহমান।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ওবাইদুর রহমান জানান,সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে তন্ময় সরকার (১৯) কে সোমবার (৪
সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে নড়াইল সদর থানাধীন মালিয়াট গ্রাম থেকে গ্রেফতার
করা হয়। তার বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২
এর ৮(১)/৮(২)/৮(৩)৮(৪) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। আজ ৫ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ
আদালতে আসামি তন্ময় সরকারকে হাজির করলে আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪
ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আসামি ইউটিউব থেকে ভিডিও
দেখে শিখে গুগল (Google) সার্চ দিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নগ্ন ছবি
গুলো তরুণীদের সংগৃহীত ছবির সমন্বয়ে এডিট করে থাকে। পরবর্তীতে বিভিন্ন
ভুয়া আইডির মাধ্যমে তরুণীদের মেসেঞ্জার ও ইনবক্সে অশ্লীল ছবিগুলো পাঠিয়ে
তাদের থেকে অর্থের দাবি করে। অনেক ভুক্তভোগী তরুণী ও তার পরিবার সামাজিক
সম্মানহানির ভয়ে আসামি তন্ময়কে তার প্রত্যাশা অনুযায়ী টাকা দিয়েছেন।
এমনকি বিভিন্ন সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী টাকা না পাওয়ায় সে ছবিগুলো ভুয়া
ফেসবুক আইডির মাধ্যমে পোস্ট করে দিতেন। তার প্রধান উদ্দেশ্য অশ্লীল ছবি
গুলোকে পুঁজি করে ভুক্তভোগী পরিবার গুলো থেকে অনৈতিক অর্থ সুবিধা ভোগ
করা।
জানা গেছে ০৪/০৯/২০২৩ তারিখে নড়াইল সদর থানায় ভুক্তভোগী এক তরুণীর পিতা,
অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন যে, সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে তার মেয়ের অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দিয়ে অনৈতিক ভাবে অর্থের
দাবি করছেন। এর পর জেলা পুলিশের একাধিক টিম এই মামলার তদন্তে নেমে
চাঞ্চল্যকর আরও বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেন। ভুক্তভোগী মেয়েদের পরিচিত মেয়ে বন্ধুদের ছবি সেট করে
Fake ID খুলে বন্ধুত্বের অনুরোধ (Friend Request) পাঠাতো।
ভুক্তভোগীরা তাদের বন্ধু ভেবে ঐ বন্ধুত্বের অনুরোধ স্বীকার করে (FRequest Accept) করে। ফলে তাদের ID তে
প্রবেশ করে ছবি সংগ্রহ করা প্রতারকের সহজ হয়। শুধুমাত্র ভুক্তভোগী ঐ
তরুণীই নয় আরও অনেক তরুণীই এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে এডিটকৃত নগ্ন ছবি গুলো
ভুক্তভোগী মেয়েদের ইনবক্সে পাঠানোর পাশাপাশি ঐ ধরনের বিকৃত অশ্লীল
ছবিগুলোকে পুঁজি করে অর্থের দাবি করতো।
পুলিশ সুপার মোসা: সাদিরা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের সাইবার অপরাধ
নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ সর্বদা
সচেষ্ট আছেন।