নড়াইলে জীবিত নারীকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতার টাকা উওলোন

নড়াইলে

 নড়াইলের কালিয়ায় জীবিত বয়স্ক ভাতাভোগী নারীকে মৃত দেখিয়ে ও এক ব্যক্তিকে নমিনি সাজিয়ে বয়স্ক ভাতার টাকা উওলোন করে আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে নড়াইলের কালিয়া থানার কেশবপুর গ্রামের মৃত রাইজুল হক চৌধুরীর ছেলে ও কালিয়া সমাজসেবা অফিসের ৭নং জয়নগর ইউনিয়নের সমাজকর্মি চৌধুরী তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

নড়াইলের কালিয়ার জয়নগর ইউনিয়নের চরশুকতাইল গ্রামের ১ নং ওয়ার্ডে জীবিত বয়স্ক ভাতাভোগী স্বরূপজান বেগম (১০০) কে মৃত দেখিয়ে ভাতার টাকা আত্মসাত করেছে বলে জানা যায়। ভাতাভোগী ওই গ্রামের মৃত আলতাফ মোল্যার স্ত্রী। ভূক্তভোগী স্বরপজান অভিযোগ করে বলেন,আমি বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তোলনের জন্য নড়াগাতী কৃষি ব্যাংকে গেলে ব্যাংকের সেকেন্ড ম্যানেজার খোকন বলেন,আপনার বয়স্ক ভাতার টাকা অনেক আগেই তুলে নিয়ে গেছে,আপনি ইউনিয়ন সমাজ কর্মী চৌধুরী তরিকুল ইসলামকে নিয়ে আসেন।

আমি তরিকুলকে বার বার ফোন দিলে তিনি আমাকে বলেন,তোমার টাকা দেওয়া হবে তুমি ভাতার বইটি ব্যাংকে রেখে যাও। পরে আমি জানতে পারি তরিকুল আমাকে মৃত দেখিয়ে জয়নগর ইউনিয়নের দেবদুন গ্রামের ছিরু কাজীর ছেলে আব্দুল আলীকে নমিনী সাজিয়ে আমার বয়স্ক ভাতার এক বছরের ৬ হাজার টাকা কৃষি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে।

আমি তরিকুলকে টাকার কথা বললে সে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। (১১ মার্চ) বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে নড়াগাতী শাখার কৃষি ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় জুলাই ২০১৯ থেকে জুন -২০২০ মাস পর্যন্ত ভুক্তভোগী স্বরপজানের (৪৮৭৭) নং বহি ও (৮২) নং হিসাবের অনুকুলে কালিয়া সমাজসেবা অফিসারের স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্রে স্বরূপজানকে মৃত দেখিয়ে আব্দুল আলী নামে একজনকে নমিনী সাজিয়ে বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তোলের পরিপত্র ইস্যু করে কৃষি ব্যাংকে প্রেরণ করেন।

এ বিষয়ে ভূয়া নমিনী আব্দুল আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,স্বরূপজান নামে আমি কাউকে চিনি না,তবে কিছু দিন আগে আমি কৃষি ব্যাংক থেকে কিছু টাকা তুলেছি কিন্তু কিসের টাকা আমার মনে নেই বলে এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী চৌধুরী তরিকুল ইসলাম তার ভুল স্বীকার করে বলেন,একই নামে দুজন ভাতাভোগী হওয়ায় ভুলক্রমে স্বরূপজানকে মৃত দেখানো হয়েছে এবং তার ৬ হাজার টাকা ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত তরিকুল ভুল প্রমানের সত্যতা দেখাতে ব্যার্থ হয়েছেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন।

এ ব্যাপারে সমাজসেবা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন,জীবিত ব্যাক্তিকে মৃত সাজিয়ে আমার অফিসের সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে সত্যতা প্রমানের জন্য জীবিত স্বরূপজানকে অফিসে আসতে বলেছি। ঘটনার সত্যতা প্রমানীত হলে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃনাজমুল হুদা বলেন,বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি,জীবিত নারীকে মৃত সাজিয়ে ভুয়া নমিনী বানিয়ে সরকারী টাকা উত্তোলন দুঃখজনক। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা প্রমান পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

preload imagepreload image