নেছারাবাদে শিক্ষা কর্মকর্তা মো: নাসির উদ্দীন খলিফার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডেপুটেশন বানিজ্য, শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার,পুরানো ফাইল দেখে ইচ্ছেমত ভুল ধরে উৎকোচ নেয়া যেন তার নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষক উপর মহলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
শিক্ষকরা জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাছির উদ্দিন খলিফা এখানে যোগদান করেই শুরু করেন দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য। তিনি বিভিন্ন স্কুল থেকে সদ্য যোগদানকৃত সহকারি শিক্ষক এবং পুরাতন সহকারি শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে করেন ডেপুটেশন। প্রতিটি ডেপুটেশনে তিনি নিয়েছেন ১৫-২০ হাজার টাকা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন খলিফা স্কুল ম্যানেজিং কমিটি এবং প্রধান শিক্ষকদের অনুরোধ উপেক্ষা করে ডেপুটেশন বানিজ্য করেছেন খেয়াল খুশিমত।
তাদের অভিযোগ যে স্কুলে শিক্ষার্থী বেশি শিক্ষক কম সেখান থেকে শিক্ষক নিয়ে ঘুষদানকারিকে সুবিধাজনক স্কুলে দিয়েছেন। এতে পাঠদানে চরম ব্যাঘাত ঘটছে ওইসব স্কুলে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক কিছু জানতে চাইলেও তাদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে এ শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পশ্চিম জৌসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নাজনিন আখতার অভিযোগ করেন, আমি পুরানো একজন শিক্ষক। আমি বিশেষ কারনে অত্র বিদ্যালয় থেকে বদলির জন্য আবেদন করি।
বদলি নিয়ে বরিশালের একটি স্কুলে যোগদান করি। ওই স্কুলে যোগদান করার পূর্বে আমার পুরানো কর্মস্থল থেকে রিলিজপত্র নেয়ার জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে যাই। এ জন্য ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নমিতা রানি হালদার শিক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আমার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি অনেক অনুনয় বিনয় করে তাকে দশ হাজার টাকা দিতে চাইলে তাতে তিনি রাজি হননি। এক পর্যায়ে শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে আমাকে রিলিজপত্র দেন নমিতা রানি হালদার। কুহুদাসকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিখিল মন্ডল বলেন, আমার স্কুলে ৬০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
এর বিপরিতে ৫ জন শিক্ষক ছিল। তারমধ্যে প্রধান শিক্ষক অসুস্থ জনিত কারনে বিদ্যালয়ে আসতে পারেনা। বাকি ৪ জন শিক্ষক থেকে শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন খলিফা একজনকে ডেপুটেশনে নিয়ে গেছেন। বর্তমানে স্কুলে ৩ জন শিক্ষক আছেন। তার অভিযোগ শিক্ষা কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এই ডেপুটেশন করিয়েছেন। যাহাতে আমাদের কোন মতামত ছিলনা। বর্তমানে শিক্ষক সংকটে এ স্কুলে পাঠদানে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। নাম না প্রকাশ শর্তে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, শিক্ষা কর্মকর্তা বেশকিছু বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি বিগত অর্থ বছরের ফাইল ঘেটে খেয়াল খুশিমত দোষ ধরছেন। তিনি উৎকোচ নেয়ার জন্য এসব ভুল ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করছেন।
তার এসব অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে কেহ কোন প্রতিবাদ করলে তাকে হতে হচ্ছে নানান হয়রানি। এ সব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার কাছ থেকে যারা কোন অনৈতিক সুবিধা নিতে পারছেনা তারা এসব মিথ্যা সংবাদ ছড়াচ্ছে।