স্বরূপকাঠি উপজেলার চাঁন মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বাবা মা-কে শিক্ষকদের সামনে গালাগাল ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছে মাদক বিক্রির অভিযোগে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবাকে স্কুলে ডেকে নিয়ে ওই শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের সামনেই আরেক অভিভাবক মোঃ মুনিরুল ইসলাম অভিযুক্তর বাবা বাচ্চুকে মারধর এবং বাচ্চুর স্ত্রী আসমা কে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন বলে অভিযোগ করেছেন আসমা বেগম। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম সহ অন্যান্য শিক্ষকদের সামনেই মনিরুল আমার স্বামীকে চার পাঁচটি চড় থাপ্পড় মারে।
আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং আমাদের সামনে আমার ছেলেকে মেরে মাঠিতে ফেলে পা দিয়ে বুকের উপর চেপে ধরে। এসময় সমস্ত শিক্ষকরা চুপ করে থাকে।তারা কেহই মনিরুলের এ আচরণের কোনো প্রতিবাদ করেননি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবা বাচ্চু জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে তার স্ত্রী পুত্রের সামনে অন্য এক শিক্ষার্থী অভিভাবক মনিরুল তাকে মারধর করেছে। তার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে এবং বাচ্চাকে মেরে মাঠিতে ফেলে বুকে পা দিয়ে আঘাত করে। শিক্ষকদের অভিযোগের সত্যতা জানতে আমি ছেলেকে বরিশাল নিয়ে মাদকের টেস্ট করাই কিন্তু সেখানে মাদক সেবনের কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি। আমি নেছারাবাদ থানায় অভিযোগ করতে গেলে আমার আত্মীয় স্বজনরা বিকালে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন বলে জানান।
বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরে এ বিষয়ে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মোঃ মনিরুল ইসলাম সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমি কারো গাঁয়ে হাত তুলিনি। অভিভাবক তাদের সন্তানের বিচার না করে সাফাই করায় উপস্থিত সকলের সামনে বৎসনা করেছি। পরে বাচ্চু তার ব্যস্ততার কারণে সন্তানের খোঁজ নিতে পারে না বলায় তাকে সরি বলেছি। বাচ্চু আমার খুব কাছের মানুষ ওর ছেলে মাদকদ্রব্য বিক্রি করেছে বিদ্যালয়ের সভাপতি তাকে পুলিশে দিতে চেয়েছিল আমরা তাকে অনুরোধ করে ওর জিবন নষ্ট করিনি।
মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় যদি মানুষ বিপক্ষে কাজ করে কথা বলে তাহলে কোথায় যাবো। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, একজন ছাত্রের জন্য আমি বাকি পাঁচশত শিক্ষার্থীর ক্ষতি মেনে নেবো না। নেশাজাতীয় দ্রব্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করায় ওই ছাত্রকে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্য অভিভাবক সদস্য মনিরুল ভাই বাচ্চু ভাইর ছেলেকে শাসন করেছেন। তখন হয়ত বাচ্চু ভাই লাঞ্ছিত হতে পারেন। আমি সহকারী প্রধান শিক্ষকের বাচ্চা অসুস্থ থাকায় ব্যস্ত ছিলাম।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলে এ বিষয়ে এর বেশি দেখিনি। তবে বাচ্চু ভাই ও তার স্ত্রী এঘটনায় ভূমিকা সঠিক ছিল না। তারা তাদের সন্তানের সাফাই গেছেন অপরাধের বিচার করেননি। এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. মন্নান জানান, মনিরুল বাচ্চুকে মারধর করতে উদ্যাত হয়েছিল কিন্তু আমরা তাকে শান্ত করি। তার উপর অন্য পূর্বের রাগ থাকতেই পারে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল হক বলেন, এ ঘটনা নিয়ে বিকাল চারটায় বিদ্যালয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উভয় পক্ষের কথা না শুনে আমি কোনো মন্তব্য করবো না।