নওগাঁয় বাণিজ্যিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সৌখিন কবুতরের খামারের সংখ্যা। জেলার বদলগাছী উপজেলা সদরে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক যুবক বাণিজ্যিক ভাবে সৌখিন কবুতর পালন করে আর্থিক ভাবে বেশ লাভবান হয়েছেন। সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা এবং অভাবনীয় সাফল্য। তার এই সৌখিন কবুতরের খামার দেখে অনেকেই এমন খামার গড়ে তুলতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বদলগাছি উপজেলা সদরের জিয়ল মহল্লার ঐ যুবক আজ থেকে বছর আগে তার বাড়িতে মাত্র ৫টি সৌখিন কবুতর নিয়ে শুরু করেন কবুতর পালন।
এরই মধ্যে সেই কবুতর থেকে এখন তার একটি পূর্নাঙ্গ খামারে রয়েছে ৫শ কবুতর। সিরাজী, লাক্কা, বিউটি, ম্যাকপাই, জার্মানী শীল, লালচিলা, হাউজ প্রিজন, বারামবাগ, ময়নাকাড়ি, কালো বেরিয়ার, হলুদ বার্ক হোমার, বাগদাদ, ককা, আউল, হলুদ সিরাজী, কালো সিরাজী, লাল সিরাজীসহ প্রায় একশ জাতের দামী দামী কবুতর রয়েছে তাঁর এই খামারে। বাড়ির দু’টি ঘরে সারি সারি খাঁচা। মোট একশটি খাঁচায় এসব কবুতর শোভা পাচ্ছে। কবুতরের বিভিন্নরকমের ডাকে মুখরিত হয়ে রয়েছে পুরো বাড়ি। বাড়ির কাছাকাছি গেলেই এসব কবুতরের ডাক শোনা যাবে।
কোন খাঁচায় ডিম, কোন খাঁচায় সদ্য প্রস্ফুটিত বাচ্চা আবার কোন খাঁচায় বেড়ে উঠা বাচ্চা দেখা যাচ্ছে। মা কবুতর নিজেদের খাবার পাশাপাশি বাচ্চাদের খাওয়াতে ব্যস্ত। মায়ের মমতায় ভরা এ এক অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। খামারটি এখন বেশ লাভজনক। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন এই খামারী। খামারী জাহাঙ্গীর আলম জানান প্রতিদিন গম, ভুট্টা, হিন্টি, সরিষা, মসুর ইত্যাদি খাবার হিসেবে দেয়া হয় এসব কবুতরকে। আর খাবার দিয়ে নানাভাবে পরিচর্যা করে পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে সময় কাটাচ্ছে খামারীর কলেজ পড়–য়া পুত্র।
এ কাজে সহযোগিতা দিয়ে আসছেন তার স্ত্রীও। প্রতিবেশীসহ এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে কবুতর প্রেমীরা এই কামার দেখতে আসেন। দেখে খুশি হন। এমন কি এই খামারের লাভের কথা শুনে নিজেরাও খামার গড়তে আগ্রহ প্রকাশ করে খাকেন অনেকেই। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সৌখিন কবুতর প্রেমীরা এই খামারে কবুতর ক্রয় করতে আসেন। পুলিশ বিভাগের অনেক কর্মকর্তা তার এই কবুতরের খামার থেকে বাচ্চা এবং বড় কবুতর ক্রয় করে থাকেন।
এই খামার থেকে ১০ হাজার থেকে ৩০হাজার টাকা পর্যন্ত এক জোড়া কবুতর বিক্রি হয়ে থাকে। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন জানান এসব সৌখিন কবুতর পালন অত্যন্ত লাভজনক। কবুতর পালন করে যে কারও সংসার নির্বাহ করা সম্ভব। এসব খামার গড়ে তুলতে আগ্রহী তাদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদানসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত প্রাণীসম্পদ বিভাগ। হাঁস মুরগীর খামারের মত এসব সৌখিন কবুতরের খামার গড়ে তুলে একদিকে যেমন শখ মেটানো এবং পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়া সম্ভব বলেও তিনি জানান।