প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ১১, ২০২৫, ৯:৫৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারি ৩০, ২০২৩, ৮:৪৬ অপরাহ্ণ
দিন দিন ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হচ্ছে পটুয়াখালী জেলার প্রবেশ মুখ
ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় পটুয়াখালী সেতুর টোলপ্লাজার পেছনে রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় শহরের বর্জ্য অপসারণ করতে বাধ্য হচ্ছে পটুয়াখালী পৌর কর্তৃপক্ষ। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও স্থানীয়রা। উপরন্তু ময়লা-আবর্জনার কারণে এলাকায় বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব।
এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ করলেও তেমন কোনো প্রতিকার মেলেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অথচ পটুয়াখালীর উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। শহরের প্রশস্ত প্রধান সড়কের ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন ও দৃষ্টিনন্দন সড়কবাতি আকৃষ্ট করবে যে কাউকেই।
১৩০ বছরের পুরোনো এই পৌর শহরে বেড়েছে নাগরিক সুবিধাও। তবে এর সবকিছুই মলিন হয়ে যায় পৌর শহরে ঢুকতেই। পটুয়াখালী থেকে বরিশাল যাওয়ায় পথে ব্রিজের পূর্বপাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। সেই স্তূপে জ্বলছে নিবু নিবু আগুন। একদিকে বাতাসে ছড়াচ্ছে ময়লার দুর্গন্ধ অন্যদিকে আগুনের ধোঁয়ায় পুরো এলাকা আচ্ছন্ন। সড়কে চলাচলকারী সবাইকে নাকে রুমাল দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের সব থেকে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, আগে পটুয়াখালী শহরের ময়লা-আবর্জনা বিসিক এলাকায় নদীতীরে ফেলা হতো। পরে নদী কমিশন নিষেধ করায় সব ময়লা এখন ব্রিজের পাশে ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
সোহান নামের এক স্থানীয় যুবকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে হয়তো বাসাবাড়ি ছেড়ে যেতে হবে। এ বিষয় পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ময়লা-আবর্জনা আর দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণ হওয়ার জন্য পৌরবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং আগামী তিন মাসের মধ্যে ডাম্পিং স্টেশনের জন্য নির্ধারিত স্থানটি প্রস্তুত করে সেখানে বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি আর বলেন, পরিবেশবান্ধব একটি ডাম্পিং জোন নির্মাণের জন্য সিটিসিআরপি নামের একটি প্রকল্পের আওতায় ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
শহরের অদূরে জৈনকাঠি ইউনিয়নে ইতিমধ্যে সাত একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে যেখানে ডাম্পিং জোন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। লোহালিয়া নদীতে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ শেষ হলেই আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব এ ডাম্পিং স্টেশন ব্যাবহার শুরু করতে পারব। বাউফল এবং গলাচিপা পৌরসভাও তাদের ময়লা-আবর্জনা এখানে ফেলতে পারবে। আমরা চেষ্টা করছি এই ময়লা-আবর্জনাকে সম্পদে রূপ দেওয়ার। এ ব্যাপারে পটুয়াখালী পৌরসভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শাখার ইন্সপেক্টর মো. ফিরোজ সিকদার বলেন, ১৩০ বছরের পুরোনো পৌর শহর পটুয়াখালী।
অথচ ময়লা অপসারণের জন্য নির্ধারিত কোনো স্থান নেই এখানে। তাই নদীর তীরসহ বিভিন্ন স্থানে শহরের ময়লা ফেলা হতো। বর্তমান মেয়রের নির্দেশনায় শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য করার লক্ষ্যে আমরা সহস্রাধিক কর্মিবাহিনী নিরলস কাজ করছি। তিনি আর বলেন, আগে শহরে ২-৩ টন ময়লা উৎপাদন হতো। বর্তমানে গৃহস্থলির বর্জ্যসহ প্রতিদিন প্রায় ১৫ টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। যা অপসারণ ও ধ্বংস করা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং। পটুয়াখালী পৌর শহর অনেক ঘনবসতিপূর্ণ। তবে বর্তমানে যে স্থানে বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে সেটি অপেক্ষাকৃত ফাঁকা এলাকা। শহরের প্রবেশপথ হলেও অনেকটা বাধ্য হয়েই এই স্থানটি বর্জ্য অপসারণের জন্য সাময়িকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ডাম্পিং স্টেশন ও লোহালিয়া সেতু নির্মাণ শেষ হলে শহরবাসীর এ কষ্ট দূর হবে।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত