টুঙ্গিপাড়ায় শিশু কন্যাকে পানিতে ফেলে হত্যা; সৎ মা আটক
গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গজালিয়া গ্রামের স্লুইচগেট থেকে পানিতে ফেলে মারিয়া (৩) নামের এক শিশুকে হত্যা করেছে তার সৎ মা। এ ঘটনায় সৎ মা সোনিয়া বেগমকে (২৫) আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে ৮ টার দিকে গজালিয়া গ্রামের কাঠুরিয়ার খালের উপর নির্মিত সুইচগেট থেকে ঐ শিশুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় সৎ মা সোনিয়া। এ সময় জোয়ার থাকায় মূহুর্তেই শিশুটি পানিতে ডুবে যায়।
পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সৎ মা সোনিয়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি পানিতে ফেলে দেওয়ার ঘটনাটি স্বীকার করেন।
শিশু কন্যার বাবার রহমত মোল্লা বলেন, প্রায় পাঁচ মাস আগে সন্তান প্রসব হওয়ার সময় তার স্ত্রী রিনা বেগম সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুসহ মোট তিন মেয়ে রেখে মারা যান। চার মাস আগে ওই সন্তানদের লালন পালনের জন্য গজালিয়া গ্রামের মিজানুর শিকদারের মেয়ে সোনিয়াকে বিয়ে করি। কিন্তু মেয়েদের প্রতি বেশি ভালোবাসা থাকায় সে খুব হিংসা করতো। কিছুদিন পর এক মেয়ে মারা গেলে বাকি দুই মেয়ে সানজিদা ও মারিয়াকে নিজের কাছে রাখায় দ্বিতীয় স্ত্রী মেনে নিতে পারছিলেন না। আমি বাড়িতে না থাকলেই প্রতিনিয়ত ওদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতো। এই নিয়ে আমাদের মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকতো।
তিনি আরো বলেন, আজ খুব সকালে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে বাড়ি এসে দুই মেয়ের মধ্যে মারিয়াকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়ার কাছে জানতে চাইলে জানি না বলে দৌড়ে পালাতে শুরু করে। তখন কয়েকজন এলাকাবাসী ও স্বজনেরা তাকে ধরে ফেলেন। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ আসে। তখন মেয়েকে বাড়িতে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন সোনিয়া।
টুঙ্গিপাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি) আবুল মনসুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিয়ের পর থেকে আগের পক্ষের দুই মেয়ের সাথে বিমাতা সুলভ আচরন করতে থাকে। এনিয়ে একাধিক বার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু হিংসার বশবর্তী হয়ে মারিয়াকে স্লুইচগেট থেকে ধাক্কা দিয়ে খালে ফেলে দেয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর মারিয়াকে খুঁজে না পেয়ে টুঙ্গিপাড়া ফায়ার সার্ভিস ও খুলনা থেকে ডুবুরী দল এসে বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে।