টুঙ্গিপাড়ায় চুরি ডাকাতি প্রতিরোধে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে গ্রামবাসীর


গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে চোর ডাকাতের উপদ্রব। গরু চুরি, টুঙ্গিপাড়ার সাবেক পৌর মেয়রের বাড়িতে ডাকাতি সহ নদীপথেও বেড়েছে ডাকাতদের আনাগোনা। যদিও এসব ঘটনার পরে চোর, ডাকাতদের আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সদস্য সংখ্যা কম থাকায় এসব ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে।
তাই চুরি ডাকাতি ঠেকাতে টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল মুনসুর উদ্যোগ ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলামের চেষ্টায় গোপালপুর ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রবেশদ্বার গুলোতে লাঠি, বল্লম নিয়ে পাহারা দিচ্ছে গ্রামবাসী। তারা সেখানে বসিয়েছে চেকপোস্ট । অপরিচিত ও সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই তাকে আটকে থানার ওসি ও দ্বায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাকে জানাচ্ছেন গ্রামবাসী। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত থেকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নে পাহারা শুরু হয়।
সরজমিনে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নে দেখা যায়, বন্যাবাড়ি, জোয়ারিয়া, গোপালপুর বাজার সহ ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা ৫,৭ থেকে ১০ জন সদস্যের এক একটি দল নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। তাদের হাতে রয়েছে লাঠি, বাঁশ ও বল্লম। কোন মানুষ ও গাড়ি ঢুকলেই পাহারারতরা তাদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। আর না থামলে সাথে সাথে থানায় কল করে সেবিষয়ে জানাচ্ছেন। তখন রাতে টহলরত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা তাদের আটকে দিচ্ছেন।
গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান লাল বাহাদুর বিশ্বাস বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গরু চুরি সহ কিছু ঘটনা ঘটে। এতে এলাকার জনগনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিলো। তখন ওসি আবুল মুনসুর ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রবেশদ্বারে রাত জেগে পাহারার জন্য গ্রামবাসীদের উদ্বুদ্ধ করে।
গোপালপুরের ইউপি সদস্য পলাশ বিশ্বাস জানান, প্রতিদিন আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে পাহাড়ার দ্বায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়েছে। একজন টিম লিডার সহ ৫,৭ থেকে ১০ জনের একটি করে দল পাহারা দিচ্ছে। পাহারাদারদের কাছে থানার ওসি ও কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তার নাম্বার দেয়া হয়েছে। কারো চলাফেরা সন্দেহ জনক হলে তাকে আটক পুলিশে খবর দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল মুনসুর বলেন, গরু চুরি, ডাকাতির বিষয় খতিয়ে দেখা যায় বাগেরহাট,খুলনা ও টাঙ্গাইল থেকে আগত লোকেরা চুরি, ডাকাতির সাথে জড়িত। এছাড়া থানায় প্রয়োজনের তুলনায় পুলিশের সংখ্যা কম। তাই মূলত জনগনকে সম্পৃক্ত করে পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। চুরি প্রতিরোধে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাহারার কারনে চোর যদি ঢুকতেই না পারে তাহলে চুরিও হবে না। আর চোর ঢুকলেও বের হতে পারবে না। এছাড়া গ্রামবাসীর পাশাপাশি পুলিশের পেট্রোল টিমও টহলরত রয়েছে। উপজেলার বাকি ইউনিয়ন গুলোতেও এমন পাহারার ব্যবস্থা করা হবে। পুলিশও জনগণের যৌথ উদ্যোগে আমরা দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবো।