ছলনাময়ী নারী প্রেমিককে কাছে পেতে হত্যার নাটক

নিজের চুল এখানে সেখানে ফেলে রাখলেন। ছিটিয়ে দিলেন গরুর রক্ত। উদ্দেশ্য, নিজে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন- এমন যেন ধরে নেন স্বজনরা। অন্যদিকে স্বামীকে চিনলেন না এবং না চেনার ভান করলেন উরসজাত সন্তানকেও ছোট সন্তানদের কান্নাও মন গলেনি মায়ের।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হওয়া পরকিয়া প্রেমিকের সঙ্গে থাকতেই এমনসব ছলনা করেছিলেন এক নারী। অবশ্য ছলনাময়ী ওই নারীর শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে ওই নারী এখন স্বামীর মামলায় জেলহাজতে।ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের। খাদিজা নামে ওই নারীকে তার কথিত প্রেমিক আনোয়ার হোসেনসহ বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার সিও অফিস এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ।

এর আগে ৩ আগস্ট ভোরে স্বামীর বাড়ি আশুগঞ্জের শরীফপুর এলাকা থেকে পালিয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় খাদিজা ও তার কথিত প্রেমিককে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন স্বামী মো. সোহেল মিয়া। আশুগঞ্জ থানায় শুক্রবার দায়ের করা মামলায় সোহেল মিয়া অভিযোগ করেন, প্রায় আট বছর পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিলোকূট গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে খাদিজা বেগমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদেরও শাওন, সাইম, মোস্তাকিম নামে তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। ছয় মাসে আগে ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলার জয়লস্কর ইউনিয়নের ইয়ার নুরুল্লাহপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তার স্ত্রী খাদিজার ফেসবুক ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু হয়। নিষেধ করলেও খাদিজা কথা না শুনে আনোয়ারের সঙ্গে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। গত ২ আগস্ট একসঙ্গে সবাই ঘুমানোর পর ভোর থেকে খাদিজাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি খাদিজার পরিবারকে জানানো হলে লাশ গুম করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।পরদিন ৩ আগস্ট এ বিষয়ে খাদিজার ভাই দ্বীন ইসলাম আশুগঞ্জ থানায় সাধারন ডায়রি (জিডি) করেন। এরই মধ্যে ঘরে থাকা গরু বিক্রির পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা, চার ভরি স্বর্ণ ও কাপড় চোপড় না থাকার বিষয়টি সোহেল মিয়া দেখতে পান। বৃহস্পতিবার বিকেলে খবর পান স্থানীয় লোকজন তার স্ত্রী ও কথিত প্রেমিক আনোয়ার হোসেনকে আটক করে থানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। সোহেল মিয়া জানান, পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী নিজের চুল কেটে ও গরুর রক্ত এনে সেগুলো একটি বাড়ির একটি জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। আমরা খুন করেছি বা তিনি খুনের শিকার হয়েছে এমনটি বোঝানোর জন্যই একাজ করে খাদিজা। তার পরিবার থেকেও মৌখিকভাবে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি নানাভাবে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদও করে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *