গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ৪৮ ঘন্টায় ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন

গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা বিপিএম, পিপিএম -এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ঘটনার মাত্র ৪৮ ঘটনার মধ্যে ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করলেন জেলা পুলিশ। পাওনা মাত্র ১৪০ টাকা চাওয়ার কারনে গোপালগঞ্জে খানারপাড় গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী গাউস দাড়িয়াকে (৪৬) খুন করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করল হত্যাকান্ডে জড়িত তিন অভিযুক্ত।

গ্রেপ্তারকৃত তিন অভিযুক্তরা হলো, সদর উপজেলার কাঠি ইউনিয়নের খানারপাড় গ্রামের কাইয়ুম মোল্লার ছেলে ইস্রাফিল মোল্লা (২২), হাসান উদ্দিন দাড়িয়ার ছেলে আজিজুর দাড়িয়া ওরফে কুটি দাড়িয়া (৫০) ও কামাল মোল্লার ছেলে বজলু মোল্লা ওরফে রাজিব (২৩)। শনিবার ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে জেলার মুকসুদপুর এলাকা থেকে প্রথমে ইস্রাফিল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে গোপালগঞ্জ সদরের খানারপাড় এলাকা থেকে আজিজুর ও বজলুকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানায় পুলিশ।

আজ রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, হত্যাকান্ডের ৩—৪ দিন আগে গাউস দাড়িয়া আসামী ইস্রাফিল মোল্লার কাছে দোকানের বাকী পাওনা ১৪০ টাকা চান। এনিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এছাড়া দোকানে বাকির টাকা চাওয়া, নতুন করে বাকি না দেওয়া ও লোকজনের মধ্যে বাকির টাকা চেয়ে লজ্জা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় গাউস দাড়িয়ার সাথে ওই তিন অভিযুক্তের সম্পর্কের টানাপোড়েন ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ঘটনার দিন অন্যদিনের ন্যায় রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির সামনে তার নিজের দোকানের মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলেন গাউস দাড়িয়া। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে অভিযুক্তরা সিগারেট কেনার কথা বলে রাতে তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে প্রথমে লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করে। এতে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

পরে বাড়ির কাছেই পুকুর পাড়ে নিয়ে হাত বেধেঁ ছুরি দিয়ে ৮/৯টি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয়। পরের দিন সকালে অভিযুক্ত ইস্রাফিল মোল্লা আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেপ্তার অপর দুই অভিযুক্ত যাতে কেউ সন্দেহ না করতে পারে সেজন্য তারা লাশ দাফনে সার্বক্ষনিক সহয়তা করে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের কাছে স্বীকার করে তারা। গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. খায়রুল আলম, সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবু তাহের দেওয়ান সহ পুলিশ কর্মকর্তারা প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে গোপালগঞ্জ সদরের খানারপাড় এলাকায় মুদি ব্যবসায়ি গাউস দাড়িয়াকে অজ্ঞাতনামা অপরাধীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর লাশ পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয়। পরদিন ভিকটিমের আত্মীয়—স্বজন পুকুরে লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়।পরে পুলিশ সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

 



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *