গোপালগঞ্জ পনি উন্নয়ন বোর্ডের ক্রয়করা পুরনো, অকেজো সেই “অ্যাকোয়াটিক উইড হারভেস্টার” মেশিনটি ১১মাস ধরে ভাসছে খালে।

 গোপালগঞ্জ জেলার সকল খাল-বিল নদী-নালায় জমে থাকা কচুরীপানাসহ নানা ধরনের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করতে প্রায় অধকোটি টাকায় ক্রয়কৃত অত্যাধুনিক মেশিনটি গত ১১ মাস ধরে ভাসছে মধুমতি লেকে। চায়না থেকে আমদানি অ্যাকোয়াটিক উইড হারভেস্টার নামের এই মেশিনটি সঠিক তত্বাবধায়নের অভাবে দিন দিন নস্ট হয়ে যাচ্ছে তার যন্ত্রপাতি। গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোডের নিবাহী প্রকৌশলী মো, ফাইজুর রহমান ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নামমাত্র একটি দরপত্র আহব্বান মাধ্যমে তার পছন্দের একজন ঠিকাদার নিয়োগ করে ৩১ লাখ টাকা দিয়ে অত্যাধুনিকে এই মেশিনটি ক্রয় করেন। চায়না থেকে আমদানি এই অত্যাধুনিক মেশিনটির নাম অ্যাকোয়াটিক উইড হারভেস্টার।

১৪ই এপ্রিল গোপালগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা সাংবাদিক/রাজনীতিবিদ ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের মধুমতি লেকপাড়ে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে সকলের উপস্থিতিতে মেশিনটিতে চড়ে শুভ উদ্ভোধন করেন। কিন্ত দু:খজনক হলেও সত্য যে কিছুক্ষনের মধ্যেই মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে। সেই থেকে আজ পযন্ত মেশিনটি আর চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে মেশিনটি এখন মধুমতি লেকের খালে জোয়ারের পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে খালে। এদিকে এতো দামের এই মেশিনটি নিয়ে যখন কথা ওঠে তখন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ইমামুল হাসান ইনার ও পানি উন্নয়ন বোডের নিবাহী প্রকৌশলী মো, ফাইজুর রহমান এরজন্য একে অপরকে দায়ী করেন। তারা মানুষকে বুঝাতে চায় এই মেশিনটি ক্রয়ে তাদের কোন গাফিলতি নাই।

অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শ্বতে পানি উন্নয়ন বোডের দায়িত্বশীল একটি সুত্র আমাদের এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, দীঘদিনের পুরনো নড়বড়ে, অকেজো এই মেশিনটি নামমাত্র টাকা দিয়ে ক্রয় করে সরকারের ৩১ লাখ টাকা দুজনে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হলে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলেও মনে করেন তারা।

সাধারন মানুষ বলছেন, খাল, বিল, নদী, নালা, কচুড়িপানায় ভরা আমাদের গোপালগঞ্জ জেলা। এ জেলার মানুষ ভদ্রলোক বিধায় বিভিন্ন সরকারী অফিসের লোকজন সরকারের কোটি কোটি টাকা চুরি করে নিয়ে কোটিপতি হয়েছেন এবং হচ্ছেন। একটি মাল কম টাকায় কিনে বেশি টাকা দেখিয়ে বিল সরকারের কোটি কোটি টাকা চুরি করে নিজেদের বউদের সোনাগহনা পরাচ্ছেন, কিনে দিচ্ছেন বিলাশ বহুল গাড়ী আর বাড়ী। অ্যাকোয়াটিক উইড হারভেস্টার নামের এই পুরনো,নড়বড়ে অকেজো এই মেশিনটি কার কাছ থেকে কিনেছেন কোন জায়গা থেকে কিনেছেন এবং কত টাকা দিয়ে কিনেছেন তা তদন্ত হওয়া দরকার বলে মনে করছেন সাধারন মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফাইজুর রহমান বলেছেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মেশিনটি ক্রয়ের জন্য একটি দরপত্র আহবান করি।

সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাম্পান ট্রেডার্স সবনিন্ম দরদাতা হওয়ায় মেশিন কেনার কাজটি তাকে দেওয়া হয়। মেশিনটি পানিতে নামানোর কিছুক্ষন পর বিকল হয়ে পড়লে মেশিনটি হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করিনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর পর সেখান থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। মেশিনটি ব্যবহারের উপযোগী নয় বলে তারা জানানোর পর দাম সমন্বয় করে নিতে বলা হয়েছে।

মেসার্স সাম্পান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ইমামুল হাসান ইনার বলেছেন,পানি উন্নয়ন বোডের নির্বহী প্রকৌশলী মো, ফাইজুর রহমানের করে দেয়া সিডিউল মোতাবেকই মেশিন ডেলিভারি দিয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড হাইড্রোলিক বাদ দিয়ে মেশিন মেপে বলছে ১ ফুট ছোট হয়েছে। আর এ ব্যপারে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছিল, তারাও তদন্ত করে বলেছে যদি সাইজে কম মনে হয় তা হলে সেটুকু অনুপাতে বিল দিয়ে মেশিন নেওয়া যায়।

মেশিন কেনার সব কাগজ দেখিয়েছি। সেখানে সাইজও উল্লেখ ছিল। এখন এর একটা মেশিন কিনতে ৫০ লাখ টাকার মতো প্রয়োজন হবে। কারণ ডলারের মূল্য বেড়ে গেছে অনেক। সবকিছু ঠিক থাকার পরেও কেন এমনটা করছেন তারা জানিনা।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *