গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার মান্দ্রা, রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক হাসান মো: নাসির উদ্দীন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজগর শেখের বিরুদ্ধে নিয়োগ বিধি অনুসরণ না করে অর্থের বিনিময়ে ও অনিয়ম করে পক্ষের লোকজনকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
প্রধান শিক্ষক একজন চাকুরী প্রার্থীর সাথে অর্থ নেওয়া একটি কথোপকথনের অডিও কল রেকডিং ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার’সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে শিক্ষার্থী অভিভাবক ও সাবেক ছাত্র আনোয়ার হোসেনসহ আরও ২০জন । অভিযোগ সূত্রে ও এলাকাবাসী জানায়, দুই মাস আগে মান্দ্রা রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনের নতুন ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পরে অফিস সহায়ক, আয়া ও নৈশ প্রহরীর নিয়োগ দেয় স্কুল কতৃপক্ষ।
সেই নিয়োগে টাকার বিনিময়ে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ফারুক শেখের ছেলে নাঈম শেখকে নিয়োগ দেয়। আয়া পদেও টাকার বিনিময়ে নিজের ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়োগ দেয় প্রধান শিক্ষক হাসান মো: নাসির উদ্দীন । ওই ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে বৈধ ভাবে নিয়োগের জন্য দাবী জানান। চাকুরী প্রার্থী মাছুদ শেখ বলেন, পূর্বের ম্যানেজিং কমিটি থাকা অবস্থায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক আমাকে চাকুরী দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু দুই মাস আগে নতুন করে নিয়োগ দিলে আমাকে চাকুরী না দিয়ে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্যের ছেলেকে নিয়োগ দেয়।
পরে আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে ফোন করে টাকা চাইলে টাকা সভাপতির কাছে আছে বলে আমাকে জানায়। এ বিষয়ে জানার জন্য মান্দ্রা রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনে গেলে প্রধান শিক্ষক হাসান মো: নাসির উদ্দীনকে পাওয়া যায়নি ও তার ব্যাবহারিত ০১৭১৭-০৪…০ মোবাইল নাম্বারে বারবার কল করলেও তিনি দূরে আছেন বলে ফোনটি কেটে দেন। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজগর শেখ অসুস্থাতার কারণে মেডিকেলে ভর্তি থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, নিয়োগের পরে আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি।
প্রধান শিক্ষক এককভাবে নিয়োগ দেওয়ার কোন ক্ষমতা রাখে না। নিয়োগ বোর্ডে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। সভাপতির বিরুদ্ধে গেলে প্রধান শিক্ষকের চাকুরী থাকবে না। একজন ডিজি প্রতিনিধি আমি দেই আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা থাকেন। তিনি যে সভাপতি বা প্রধান শিক্ষকের কথায় একজনকে নিয়োগ দেবেন এমন দূর্বল কর্মকর্তা আমার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না। তিনি আরও বলেন, ওখানে গিয়ে দেখলাম একজন ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছে, আমি বললাম আপনি ৪লক্ষ টাকা দিয়েছেন কেন। ৪ লক্ষ দিয়ে যখন হলো না তাহলে সঠিকটাই হয়েছে।
আরেকজন ব্লাংক চেক নিয়ে ঘুরছে, ব্লাংক চেক নেয়নি তারা। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, যারা চালাক তারা যদি এই টাকাটা না নেয়,তাহলে তারাই আগেই এই নিয়োগ বন্ধ করার জন্য প্রস্তুতি নিবে, যে টাকা নিলো না, আমাকে নিবে না। এই জন্য যাতে পরীক্ষা নেওয়া যায় তারা অনেকেই চালাকি করে টাকা নেয়। তারপরে যে আসলে আসলো। যে আসলো না পরে তার টাকা ফেরৎ দিলো। আর পরীক্ষাটা বা নিয়োগটা বন্ধ করতে পারলো না। ওই টাকাটা আগে না নিলে আগেই বলাবলি করত এর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে ওর টাকা নিয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি চালাক বলে এটা করেছেন।