গোপালগঞ্জে স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

গোপালগঞ্জের উলপুরে স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও স্বজনদের বিরুদ্ধে।

গত মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর গ্রামের মো. জামাত মোল্লার ছেলে বাদল মোল্লা (৪০) ও তার পরিবারের লোকজন এ ঘটনাটি ঘটায় বলে জানাগেছে।

ঘটনা স্থলে গেলে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ বাদল মোল্লা ও তার পরিবারের লোকজন সাবিনা বেগমের বাপের বাড়ি থেকে যৌতুক আনার কথা বলে অত্যাচার করতো। গরিব পরিবারের সন্তান সাবিনা বেগম স্বামীর অত্যাচারে বাপের বাড়ি থেকে কষ্ট করে ২ লক্ষ টাকা এনে দিয়েছিলো। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বাদল মোল্লা ভ্যান গাড়ি চালক। নিয়মিত নেশা করে ঘরে আসে, জুয়া খেলার প্রতি আসক্ত। প্রায় প্রতিদিন ঘরে এসে সাবিনার ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করে। নিজের দোষ চাপিয়ে রাখার জন্য সাবিনার ওপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে আজেবাজে কথা বলে মারধর করতো তার স্বামী। ঘটনার দিন বাদল মোল্লার বাবা জামাত মোল্লা, মা মরিয়ম বেগম, বড় ভাই বৌ-কল্পনা বেগম, স্বামী-আলমগীর মোল্লা, ছোট ননদ, তার স্বামী-রিপন ফকির, বড় ননদ-উজালা বেগম একত্রিত হয়ে প্রথমে সাবিনাকে প্রচন্ড মারধর করে বলে, তোর বাবার বাড়ি থেকে আরোও ২ লক্ষ টাকা নিয়ে আয়, সাবিনা টাকা আনতে অস্বীকার করায় ঘরে থাকা জমিতে পোকামাকড় ধ্বংস করার (করাটি) বিষ জোর করে সাবিনার মুখের মধ্যে ঢেলে দেয় তার স্বামী। পরে ৪ কন্যা সন্তানের জননী সাবিনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়।
মায়ের এই অবস্থা দেখে ছোট মেয়ে তোড়া মনি (১০) নানা বাড়ি দৌঁড়ে গিয়ে মায়ের দুরবস্থার কথা বলে।

পরে সাবিনার বাবার বাড়ির লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সাবিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও মৃত্যুর সাথে সে পাঞ্জা লড়ছে। ভুক্তভোগী সাবিনার পরিবারের লোকজন বলেন, বিয়ের পর থেকে একটা দিনের জন্য ও শান্তিতে থাকতে পারেনি অভাগা সাবিনা। আমরা জানতামনা না যে বাদল মোল্লা জুয়া ও নেশা খোর। সে নেশা করে ঘরে ফিরে প্রতিদিনই মারধর করতো। আমরা গরিব মানুষ আগে আমাদের মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ২ লক্ষ টাকা দিছি যাতে ওরা সুখে থাকে। টাকা গুলো শেষ করে আবারও ২ লক্ষ টাকা চায় এখন আমরা কোথা থেকে টাকা দেবো। টাকা দিতে পারি নাই বলে আমার মেয়েকে বাদলের পরিবারের সকলে মিলে মারধর করে, মেরে ফেলার উদ্যেশ্যে তাকে জোর করে বিষ খাইয়ে দিছে। সাবিনাকে বিষ খাওয়ানোর পরে ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন ওর কানের দুল, নাকফুল, গলার চেইন খুলে রেখে দিয়েছে। হাসপাতালে এখন পর্যন্ত তাকে কেউ দেখতে আসে নাই। আমাদের একই গ্রামে বাড়ি ওর স্বামী একবারও হাসপাতালে খোজ নেয় নাই। বাদলের পরিবার সাবিনাকে তালাক দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে আশা তো দূরের কথা, বাড়ির গোয়ালের ২টি গরু ও ঘরে থাকা দামি জিনিস পত্র নিয়ে পালিয়ে চলে গেছে ওর স্বামী। এখন পর্যন্ত সাবিনার স্বামীর কোন খোঁজ পাওয়া যায় নাই। অসহায় ও দুর্বলদের ওপর এই অত্যাচার কতদিন চলবে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সাবিনার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রস্ততি নিচ্ছে বলে জানাগেছে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *