গোপালগঞ্জে কেমিক্যালযুক্ত আমে বাজার সয়লাব, প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ক্ষুব্ধ ক্রেতা সাধারণ

গোপালগঞ্জ সহ জেলার ৫ উপজেলার অধিকাংশ ফলবাজারে কেমিক্যালযুক্ত আমে বাজার সয়লাব। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় অধিকমূল্যে মৌসুমী ফল আম কিনেও রীতিমতো প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তা সাধারণ।

ফলবাজারে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও কৃষি বিপণন দপ্তরের কার্যক্রম দৃশ্যমান না থাকায় এ বছর আমের এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিমত ভুক্তভোগী ক্রেতা সাধারণের।

জনস্বার্থে বিষয়টি গত ১২জুলাই অনুষ্ঠিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় উত্থাপিত হলেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি প্রশাসনকে। আর্থিক ও পুষ্টিগত উভয় দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সাধারণ ক্রেতারা আম কেনার প্রতি ক্রমেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

আম কিনে প্রতারিত এক ভদ্রমহিলা গণমাধ্যমকে জানান, তার সন্তানদের জন্য অনেক কষ্ট করে গতকাল গোপালগঞ্জ বড়বাজারের ফলপট্টি থেকে শক্ত দেখে ৩কেজি আম্রপালী আম ৩০০ টাকা দিয়ে তিনি ক্রয় করেন। পরের দিন সেই আমগুলোর মধ্য থেকে একটি আম তার ছোট ছেলেকে চুষে খেতে দিলে সে আম একবার মুখে দিয়েই তা ছুঁরে ফেলে দেয়। পরে একে একে সবগুলো আম কাঁটলে একই অবস্থা। আমগুলোর মধ্যে একটি ঝাঁজালো গ্যাসের আবরণ তৈরি হয়ে রয়েছে। আমগুলো মোটেও খাওয়ার উপযোগী ছিলো না। অতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারেই এমনটি হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সেই মায়ের। পরে সেই ভদ্রমহিলা আমগুলো দোকানে না নিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েদেন। পাছে কেউ সেই আমগুলো খেয়ে অসুস্থ না হয়ে পড়েন সেই ভয়ে।

এতো হলো একজনের গল্প। গোপালগঞ্জে প্রতিদিন এভাবেই কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে ক্যামিকেলযুক্ত আম কিনে সাধারণ ক্রেতারা হরহামেশাই প্রতারিত হচ্ছেন। দেখার বা বলার যেন কেউ নেই। ভুক্তভোগীরা গণমাধ্যমে আক্ষেপ করে বলেন, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন যদি আম মৌসুম শুরুর আগেই। জেলার সকল ফল ব্যবসায়ীদেরকে ডেকে একসাথে বসে অবহিত করে দিতেন যেন কোন অবস্থাতেই কেমিক্যাল যুক্ত আম এ জেলায় বিক্রি না হয়, হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই মর্মে কঠিনভাবে সতর্ক করে দিলে আমাদের আজ এত বড় আর্থিক ক্ষতি সাধিত হতো না। ক্যামিকেলযুক্ত আম কিনে নিয়ে তা খেতে পারছি না। সব ফেলে দিতে হচ্ছে, এর দায়ভার কে নেবে?

গোপালগঞ্জ বড়বাজার সহ জেলার সব জায়গায় একাধিক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কেমিক্যালযুক্ত আম উদ্ধার করে তা ধ্বংস করা এবং সংশ্লিষ্ট আম সরবরাহকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান সহ ফলব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন জেলা প্রশাসন। এমনটি মনে করছেন সাধারণ জনগণের।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *