গোপালগঞ্জে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তার ইট তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২ নং বৌলতলী ইউপি চেয়ারম্যান বাবু সুকান্ত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তার ইট তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বার খাদিয়া — কড়িগ্রাম সংযোগ সড়কের গোপালগঞ্জ অংশের ইট বিছানো দেড় কিলোমিটার সড়কের প্রায় সমস্ত ইট চেয়ারম্যান শ্রমিক দিয়ে তুলে গাড়ি ও ট্রলার যোগে মধুমতি নদী সংলগ্ন নিজের বাড়ির সামনে ঘাটলা পারে জড়ো করতে থাকেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই এলাকায় উপকারভোগীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করে। পরে এলাকাবাসী গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি অবহিত করেন।

খবর পেয়ে রোববার (২৭ জুন) গণমাধ্যমকর্মীরা বৌলতলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের আলোচিত সেই বার খাদিয়া – কড়িগ্রাম সংযোগ সড়কটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে এলাকাবাসীর অভিযোগের সত্যতা পান। এ বিষয়ে বৌলতলী ইউপি চেয়ারম্যান বাবু সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, গত বছর বন্যার জলে ওই সড়কটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহলে জানানো হলে জনসাধারণের কথা বিবেচনা করে জাইকা’র আওতায় এ বছর ওই সড়কটি আরো ৩ ফুট উঁচু করার প্রকল্প পাস হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পাওয়া ওই ঠিকাদার নতুন করে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করার পূর্বে সড়ক থেকে পুরোনো ইটগুলো তুলে ফেলতে বার বার আমাকে তাগাদা দেন। পরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে সরকারি ইটগুলো সংরক্ষণের জন্য নিজ উদ্যোগে তুলে পরিষদের সামনে মধুমতি নদীর পাড়ে একজায়গায় জড়ো করি। ইতোমধ্যেই ওই সড়কের অনেক ইট স্থানীয়রা তুলে নিয়ে গেছেন। তাই দায়িত্ববোধ থেকেই সদর উপজেলার ইউএনও স্যার ও পিআইও সাহেবকে বিযষয়টি জানিয়ে খোলা জায়গায় ইটগুলো রেখেছি। তাছাড়া আমার অসৎ কোন উদ্দেশ্য থাকলে আমি ইটগুলো প্রকাশ্যে না রেখে অন্য কোন জায়গায় লুকিয়ে রাখতাম। আসলে সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাকে হেয় করতে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, ইট তুলে নেওয়ার বিষয়টি আমি গতকাল শুনেছি। তবে চেয়ারম্যান আমার অফিস স্টাফকে ইট তুলে নেওয়ার বিষয়টি আরো আগে জানিয়েছেন তা আমার জানা ছিলোনা। বর্তমানে ওই রাস্তার ইট চেয়ারম্যানের হেফাজতে রয়েছে বলে আমি নিশ্চিত হয়েছি। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সংরক্ষণের জন্য রাস্তার ইট তুলে নেওয়ার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে বৌলতলী ইউপি চেয়ারম্যান কাজটি ঠিক করেন নি। তবে সরকারি ইট বেহাত হবার কোন সুযোগ নেই। এর পরেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো। এ বিষয়ে সদর উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান নিরুন্নাহার ইউসুফ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৭ জুন উপজেলা পরিষদের মাসিক সভার রেজুলেশনে চেয়ারম্যান এ বিষয়টি উত্থাপন করলে বিব্রতকর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *