গোপালগঞ্জের সাহাপুরে ফুটবল খেলায় প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় ও সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১০ নং সাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ফুটবল খেলায় প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় ও সমর্থকদের ওপর হামলায় খেলোয়াড় সহ প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানাগেছে। আহতরা হলেন, সাহাপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বড় ডোমরাশুড় গ্রামের তপন বৈদ্যের ছেলে পলক বৈদ্য (২২), বিভীষণ বৈদ্যের ছেলে জয় বৈদ্য (১৮), নগেন বৈদ্যের ছেলে বাপ্পী বৈদ্য (২৩),অমল বিশ্বাসের ছেলে সবুজ বিশ্বাস (১৮), সুধাংশু বৈদ্যের ছেলে সোহাগ বৈদ্য (২১), হরিপদ ভক্তের ছেলে নিতাই ভক্ত (১৯) ও বলাই ভক্ত (১৬), নিমাই ভক্তের ছেলে সৌরভ ভক্ত (২১), মানিক বিশ্বাসের ছেলে জিৎ বিশ্বাস (১৪) সহ আরো প্রায় ২০ আহত হন। পরে আহতদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া সহ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে সবুজ বিশ্বাসের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে খুলনায় রেফার্ড করা হয়।
এ ঘটনায় আহত ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে চরম ক্ষোভ, হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। আহত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে সাহাপুর ইউনিয়নের স্থানীয় মাঠে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্টের ম্যাচে ৩ নং ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে ৯ নং ওয়ার্ডের খেলোয়াররা ফুটবল খেলায় অংশ নেন। খেলা শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে ২–১ গোলে এগিয়ে থাকা ৯ নং ওয়ার্ডের খেলোয়ারদেরকে ৩নং ওয়ার্ডের খেলোয়াররা কর্ণার কিক নিয়ে বাক বিতণ্ডার জেরে গোবিন্দ রায়ের ছেলে প্রাইমারি শিক্ষক এবং ওইদিনের ম্যাচ পরিচালনাকারী রেফারী নিউটন রায় (৩৮), চিত্ত রায়ের ছেলে ত্রিনাথ রায় (৪৫), ত্রিনাথ রায়ের ছেলে আকাশ রায় (২০), কার্তিক কির্ত্তনীয়ার ছেলে সুব্রত কীর্ত্তনীয়া (২৯), অসিত রায়ের ছেলে অমিত রায় (২৩) সহ অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জন অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়।
বর্তমান চেয়ারম্যান বিনয় সরকার ও তার লোকজন হামলার ঘটনা উপস্থিত থেকে প্রত্যক্ষ করলেও প্রথমে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করেননি। পরে যদিও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর খোঁজ খবর নেন তিনি। বর্তমানে ভুক্তভোগী ওই পরিবারগুলোর মাঝে চরম ক্ষোভ, হতাশা ও অজানা শঙ্কা বিরাজ করতে দেখা গেছে। খুলনায় আইসিইউতে ভর্তি সবুজ বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে একমাত্র সন্তানের এ অবস্থায় তার গর্ভধারিনী মা, ঠাকুর দাদা ও ঠাকুর দিদিকে কান্না করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যাচ পরিচালনাকারী রেফারি নিউটন রায়ের…..৪৪৮ নম্বরের মুঠোফোনে বিভিন্ন নম্বর থেকে একাধিক বার কল দিয়েও তার সাক্ষাৎকার নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুবোধ চন্দ্র হীরা এ বিষয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনার দিন আমি উপস্থিত ছিলাম না পরে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ওই হামলায় কেবল ৯ নং ওয়ার্ডের খেলোয়াড় ও তাদেরকে হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে এগিয়ে যাওয়া সমর্থকেরাই কেন হামলার শিকার হয়েছেন তা আমার জানা নেই। অন্যরা নয় কেন?
এ বিষয়ে সাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিনয় সরকারকে ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার পূর্বে উপজেলা ও থানা প্রশাসনকে অবহিত করে ম্যাচ পরিচালনা কমিটি গঠন করেছিলেন কি না? ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন সদস্য ওইদিন উপস্থিত ছিলেন কিনা? তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপস্থিত ছিলেন। তাহলে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ ঘটলে তাদের ভূমিকা কি ছিল জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।